টুইন টাওয়ার হামলার গোপন নথি প্রকাশ করল এফবিআই

যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলা এবং বিমান ছিনতাইকারীদের প্রতি সৌদি আরব সরকারের সমর্থন নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত সংক্রান্ত প্রথম নথি প্রকাশ করেছে  ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।
ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলা এবং বিমান ছিনতাইকারীদের প্রতি সৌদি আরব সরকারের সমর্থন নিয়ে ওঠা অভিযোগের তদন্ত সংক্রান্ত প্রথম নথি প্রকাশ করেছে  ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।

সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক নির্বাহী আদেশের পর এফবিআই ওই নথি প্রকাশ করেছে।

বিমান ছিনতাইকারী দুজনকে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্বরত এক সৌদি কনস্যুলার কর্মকর্তা ও সন্দেহভাজন এক সৌদি এজেন্টের সহযোগিতার অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করে এফবিআই। তাদের সেই তদন্তে পাওয়া তথ্য–প্রমাণ উঠে এসেছে ২০১৬ সালের এই নথিতে।

তদন্তে একাধিক সংযোগ ও সাক্ষীর বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে এফবিআইয়ের সন্দেহভাজন ওমর আল-বায়োমির সংশ্লিষ্টতার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যায়। নিজেকে ছাত্র হিসেবে পরিচয় দেওয়া ওমর আল-বায়োমি নিয়মিত লস অ্যাঞ্জেলেসের সৌদি দূতাবাসে যাতায়াত করতেন। এফবিআই তাকে সৌদি এজেন্ট হিসেবে সন্দেহ করেছিল। এফবিআই -এর নথিতে বর্ণনা করা হয়েছে যে দুই ছিনতাইকারীকে সাহায্য করার জন্য ওমর আল-বায়োমি 'ভ্রমণ সহায়তা, বাসস্থান এবং অর্থায়ন' প্রদানের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন।

দুই দশক আগের ওই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত চারটি বিমান ছিনতাইকারী ১৯ জন আল কায়েদার মধ্যে ১৫ জনই সৌদি আরবের নাগরিক ছিলেন। তবে, ৯/১১ হামলায় সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বির্তক থাকলেও সৌদি সরকার বরাবরই এই হামলায় কোনো ধরনের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।

রোববার আবারও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আবারও জানান, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের হামলার তদন্ত সম্পর্কিত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায়।

তিনি বলেন, 'সৌদি আরব এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই নথিপত্রগুলো প্রকাশের পক্ষে ছিল এবং আমরা আত্মবিশ্বাসী যে নথিপত্রগুলো 'সম্পূর্ণভাবে এটি দেখাবে যে, কোনোভাবেই সৌদি আরব এই হামলায় জড়িত ছিল না ...'

কংগ্রেস কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত "৯/১১" কমিশনও ২০০৪ সালে তাদের প্রতিবেদনে সৌদি আরব সরকার ও তার কর্মকর্তারা যে হামলা সম্পর্কে আগে থেকে জানতেন বা হামলায় কোনওভাবে জড়িত ছিলেন তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিলেন।

যদিও সেসময় কমিশনের বেশ কয়েকজন সদস্য বলেছেন, সৌদি সরকারের জড়িত থাকার সম্ভাবনা নিয়ে সম্পূর্ণভাবে তদন্ত হয়নি।

৯/১১ হামলায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্বজনেরা দীর্ঘদিন ধরে এই গোয়েন্দা নথি প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ তাদের দাবি জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। তথ্য প্রকাশ না করা পর্যন্ত ৯/১১ হামলার ২০তম বার্ষিকীতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে নিউইয়র্ক সিটির গ্রাউন্ড জিরোতে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন তারা। নথি প্রকাশ না করলে বাইডেনকে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ না দিতে দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন তারা।

এরপরই তদন্তের নথি প্রকাশের নির্বাহী আদেশ দেওয়া দেন বাইডেন।

নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্বজনদের অভিযোগ ছিল, ওই হামলা সম্পর্কে সৌদি কর্মকর্তারা আগে থেকে জানলেও তারা তা ঠেকানোর চেষ্টা করেননি।

প্রতিবেদন প্রকাশের পর ৯/১১ হামলায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের স্বজনেরা সিএনএনকে জানান, হামলায় সৌদি জড়িত থাকার বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Women MPs in reserved seats: How empowered are they really?

Fifty-two years ago, a provision was included in the constitution to reserve seats for women in parliament for a greater representation of women in the legislative body.

11h ago