গবেষক ও কথাসাহিত্যিক বশীর আল-হেলাল মারা গেছেন

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও গবেষক বশীর আল-হেলাল মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় তিনি মারা যান।
গবেষক ও কথাসাহিত্যিক বশীর আল-হেলাল। ছবি: সংগৃহীত

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও গবেষক বশীর আল-হেলাল মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় তিনি মারা যান।

বাংলা একাডেমির ফেলো ও সাবেক পরিচালক বশীর আল-হেলালের পরিবারের বরাত দিয়ে বাংলা একাডেমির সচিব লোকমান হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গবেষক বশীর আল-হেলাল দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। বশীর আল-হেলালের মেয়ে আজ দুপুরে বাংলা একাডেমিতে তার মৃত্যুর খবর জানান।

তিনি আরও জানান, বিকেল ৫টায় বশীর আল-হেলালের মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। সেখানে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।

১৯৩৬ সালের ৬ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ জেলার তালিবপুর গ্রামের মীর পাড়ায় বশীর আল-হেলালের জন্ম। ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখি করতেন। ১৯৫৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে বাংলায় এম এ পাস করে চাকরি নেন কলকাতায় হজ কমিটিতে। তখন কলকাতা মুসলমানদের জন্য একটি পত্রিকা বের হতো। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে জড়িয়ে পড়েন রাজনীতিতে।

তার প্রথম গল্পের বই 'স্বপ্নের কুশীলব' কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়।

১৯৬৮ সালের শুরুর দিকে তিনি মাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। তারপর ১৯৬৯ সালের শুরুতে সহ-অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন বাংলা একাডেমিতে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। আর চব্বিশ বছর বাংলা একাডেমিতে কাজ করার পর ১৯৯৩ সালে পরিচালক পদে থেকে অবসর নেন।

গ্রামীণ ও শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনকে আরও অর্থবহ করতে জীবনধর্মী ও সমাজ সচেতনতামূলক অসংখ্য ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেন বশীর আল-হেলাল। প্রায় চল্লিশটি প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে বাংলাভাষার ওপরেই তার গ্রন্থ সংখ্যা ছয়টি।

তার আটাশ পৃষ্ঠার ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস (১৯৮৫) একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক গবেষণালব্ধ গ্রন্থ। তার প্রকাশিত গল্পের বইগুলো হলো-'প্রথম কৃষ্ণচূড়া', 'আনারসের হাসি', 'বিপরীত মানুষ', 'ক্ষুধার দেশের রাজা', 'গল্পসমগ্র-প্রথম খণ্ড'। প্রকাশিত উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- 'কালো ইলিশ', 'ঘৃতকুমারী', 'শেষ পানপাত্র', 'নূরজাহানদের মধুমাস', 'শিশিরের দেশে অভিযান' ও 'যে পথে বুলবুলিরা যায়'।

সাহিত্যকর্মের জন্য তিনি আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৩), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (২০০২), গৌরী ঘোষাল স্মৃতিসম্মান, কলকাতা (২০০২), অধ্যাপক আবুল কাসেম পুরস্কার (২০০৪) ও তমুদ্দিন মজলিশ মাতৃভাষা পদকে (২০১৫) ভূষিত হয়েছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Economic crisis to deepen in 2026: Debapriya

Economic crisis to deepen in 2026: Debapriya

The economist says at the first Moazzem Hossain Commemorative Lecture on macroeconomic challenges and way forward

13m ago