সাহিত্য

মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন কাজী আনোয়ার হোসেন

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ‘মাসুদ রানা’র স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন। আজ দুপুর পৌনে ৩টায় বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে তার দাফন্ন সম্পন্ন হয়। এর আগে সেগুনবাগিচা জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
কাজী আনোয়ার হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন 'মাসুদ রানা'র স্রষ্টা কাজী আনোয়ার হোসেন। আজ দুপুর পৌনে ৩টায় বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরে তার দাফন্ন সম্পন্ন হয়। এর আগে সেগুনবাগিচা জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে মারা যান কাজী আনোয়ার হোসেন। এর পর তার মরদেহ ফ্রিজিং ভ্যানে করে কাকরাইলের কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে সকাল ১০টায় তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার সেগুনবাগিচার বাসভবনে।

তার বাসভবনেই অবস্থিত সেবা প্রকাশনী। যার মাধ্যমে ষাটের দশক থেকে বাংলাদেশে পাঠক সৃষ্টির এক অনন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি। তার অনন্ত যাত্রার পর্বও শুরু হয় এ স্থান থেকে।

শেষবারের মতো কাজী আনোয়ার হোসেনকে শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে তার মরদেহ আনার পর পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে এলাকাবাসী, পাঠক-ভক্তরা ভিড় জমান।

কাজী আনোয়ার হোসেনকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তার শ্যালিকা ও বিশিষ্ট শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সেবা প্রকাশনীর লেখক নিয়াজ মোরশেদ। তিনি বলেন, এদেশের পাঠক সৃষ্টিতে অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। হুমায়ূন আহমেদের আগেই তিনি এ দেশে বই পড়ার পথটি তৈরি করেছিলেন। এমনকি জেলায় জেলায় নিজের গাড়িতে চড়ে মাইকিং করে বই বিক্রি করেছিলেন।

সেগুনবাগিচার বাসভবনে ছেলে কাজী শাহনূর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আমার বাবা একজন যোদ্ধা মানুষ ছিলেন। সব সময় সাহস নিয়ে বেঁচেছেন। এ মানুষটি পরিবারকে নিয়ে থাকতে পছন্দ করতেন।

জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মাসুদ রানা সত্তাধিকার নিয়ে একটি মামলা লড়েছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। সে বিষয়ে তার পুত্রবধূ মাসুমা মায়মূর বলেন, ৪৩ বছর ধরে মাসুদ রানা ও কুয়াশা সিরিজ লিখেছেন। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে তার বইগুলোর লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিম নিজেকে দাবি করেন। কপিরাইট অফিস ও হাইকোর্টের রায় নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তবে এ বিষয়টি এখন অমীমাংসিত। এবং বিচারাধীন।

কাজী আনোয়ার হোসেনকে রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি না দেয়ায় আক্ষেপ করে তার চাচাতো ভাই কাজী রওনাক হোসেন বলেন, অনেক অযোগ্য লেখক রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন। কিন্তু কাজী আনোয়ার হোসেন যিনি এদেশের কিশোর-তরুণদের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করে অবক্ষয় থেকে মুক্ত রেখেছিলেন, সেই তিনি লেখক হিসেবে কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাননি। এটা আমাদের কষ্ট দেয়।

সেগুনবাগিচার বাসভবন থেকে কাজী আনোয়ার হোসেনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সেগুনবাগিচা জামে মসজিদে। সেখানে বাদ যোহর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বনানী কবরস্থানে। সেখানে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, মায়ের কবরে তাকে দাফন করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Will there be any respite from inflation?

To many, especially salaried and fixed-income individuals, this means they will have no option but to find ways to cut expenditures to bear increased electricity bills.

7h ago