করোনাভাইরাস

ওমিক্রনে ক্ষতি কম হয় ভেবে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে ক্ষতি কম হয় ভেবে আমাদের আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন ওমিক্রন ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট রিপ্লেস করেছে, বাংলাদেশেও হয়তো এক সময় সেটি হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
health_department.jpg

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে ক্ষতি কম হয় ভেবে আমাদের আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন ওমিক্রন ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট রিপ্লেস করেছে, বাংলাদেশেও হয়তো এক সময় সেটি হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ রোববার দুপুরে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম এ কথা বলেন। 

ডা. নাজমুল বলেন, সারা পৃথিবীতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। প্রতিটি দেশেই সংক্রমণে ঊর্ধ্বগতি আমরা দেখছি। বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। গত ১ সপ্তাহে বাংলাদেশে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৫টি পরীক্ষা করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সপ্তাহের তুলনা ৪৮ হাজার ১৯২টি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শতকরা হিসেবে ২২২ শতাংশ বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ১ সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে শতকরা ৬১ শতাংশ।

আশার কথা হচ্ছে, শনাক্ত ১০০ জন রোগীর মধ্যে ৯৬ শতাংশের বেশি রোগী সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, করোনা অতিমারির মধ্যে গত ২ বছর আমরা যে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি, বিশেষ করে গত বছর ডেলটা দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কাটিকে আমরা চেষ্টা করে সামলেছি অথবা সামলানোর চেষ্টা করেছি। সেই ধাক্কার পরবর্তী বিষয় কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে। আমাদের অনেকেরই একটি ধারণা হয়েছে, বাংলাদেশে এখনো হয়তো ওমিক্রন—যে নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ধরা পড়েছে তাতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু ভয়াবহ কিছু নয়। এটি কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে তথ্য-প্রমাণ দিয়ে একেবারে নিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। আমাদের ধরে নিতে হবে বাংলাদেশে এখনো মূলত ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট প্রাধন্য বিস্তার করে আছে। ওমিক্রমন সংক্রমণ ঘটেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে যেমন ওমিক্রন ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট রিপ্লেস করেছে, বাংলাদেশেও হয়তো এক সময় সেটি হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে আমাদের আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই, বলেন তিনি।

নাজমুল আরও বলেন, টিকা পেতে যত মানুষ নিবন্ধন করেছেন, তত মানুষ টিকা গ্রহণ করেননি। ওমিক্রনে ক্ষতি কম হয় ভেবে আমাদের আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। যে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চেষ্টা করছি, সেটাকে যদি আগামী দিনগুলোতে বজায় রাখতে চাই তাহলে অবশ্যই আমদের গত বছর যে সতর্কতা দেখিয়েছিলাম, সে ধরনের সতর্কতা প্রকাশ করতে হবে।

আসন্ন অমর একুশে গ্রন্থমেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী বইমেলার কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার কাছে বিনীত অনুরোধ রাখতে চাই, এই বইমেলায় যেসব প্রকাশক বই প্রকাশ করবেন, যাদের স্টলে বই সাজিয়ে আমাদের জন্য উপস্থাপন করবেন, প্রত্যেকের যেন এরই মধ্যে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া সম্পন্ন হয়ে যায়। যাতে বুস্টার নেওয়ার সময় তারা যেন বুস্টার ডোজ নিতে পারেন। যদি সম্ভব হয়, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির দিকে খেয়াল রেখে প্রয়োজন অনুযায়ী, প্রথম ২ সপ্তাহ দেখে তার পরে যদি বইমেলা পিছিয়ে নেওয়া যায় তাহলে প্রাণের মেলায় মন খুলে চলার যে বিষয় সেটি বোধ হয় সহজ হয়।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে কর্তৃপক্ষদের প্রতি আহ্বান রাখতে চাই, শিক্ষার্থীদের নিবন্ধনে তারা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। আমরা বিশ্বাস করি, এই বিধি-নিষেধগুলো যার বেলায় যেটি প্রজোয্য সেটি যদি আমরা মেনে চলি তাহলে সংক্রমণের এখন যে চিত্র আছে, যে ঢেউটি আসছে বলে আমরা আশঙ্কা করছি সেই ঢেউটি গতবারের মতো সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারবো। এখানে আতংক নয়, সচেতনতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

Comments

The Daily Star  | English

Lightning strikes claim 7 lives in 4 districts

At least seven people died and nine others were injured in lightning strikes in Rangamati, Sylhet, Khagrachhari, and Cox’s Bazar districts today

1h ago