চীনে বাড়ছে করোনা, এক দিনে শনাক্ত ২০ হাজার ছাড়াল
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফলে যাতায়াতের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়াসহ জীবনযাত্রাকে সহজ ও স্বাভাবিক করার জন্য বিভিন্ন রকমের উদ্যোগ নিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে চীনের পরিস্থিতি ভিন্ন।
চীনে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনে বুধবার ২০ হাজার ৪৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ২০২০ সালে মহামারি আঘাত হানার পর এটিই দৈনিক সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার।
আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে চীনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার 'জিরো-কোভিড' কৌশল বড় আকারের চাপের মুখে পড়েছে।
মার্চ পর্যন্ত চীন স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউন, গণ পরীক্ষা ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে দৈনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
এক বিবৃতিতে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে গতকাল ২০ হাজার ৪৭২ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও কেউ মারা যাননি।
দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাংহাই শহরে উচ্চ পর্যায়ের সংক্রামক ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন তারা।
মহামারির একদম শুরুর দিকে, উহান ও তার আশেপাশের এলাকায় যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সবচেয়ে তীব্র ছিল, তখনও দৈনিক শনাক্তের হার এত বেশি ছিল না।
তবে এখন যাদের করোনাভাইরাস ধরা পড়ছে, তাদের বেশিরভাগের দেহেই কোনো উপসর্গ নেই। অর্থাৎ তারা অ্যাসিম্পটোম্যাটিক।
তারপরও সাংহাইয়ের কোয়ারেন্টিন অবকাঠামোগুলোতে করোনাভাইরাস পজিটিভ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। কর্তৃপক্ষ কঠোরভাবে করোনাভাইরাস নীতিমালা মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছে।
এ নীতিমালার মধ্যে আছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের তাদের করোনা নেগেটিভ বাবা মায়ের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া, যা পরিবারের সদস্যদের জন্য উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা ও ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বুধবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশের ৮০ শতাংশ নতুন সংক্রমণ সাংহাই থেকে আসছে।
গত সপ্তাহে আড়াই কোটি মানুষের শহর ও চীনের বাণিজ্যিক কেন্দ্র সাংহাইতে কয়েক দফায় লকডাউন আরোপ করা হয়েছে। ফলে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে অনেক মানুষ নিজেদের ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করেছেন এবং অনেকে বারবার পরীক্ষা করিয়েছেন নিশ্চিত থাকার জন্য।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংহাইয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, দেশের অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত এ শহরটি এ ধরনের বড় পর্যায়ের সংক্রমণ পরিস্থিতির সংগে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত ছিল না।
চীনের জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলে সিসিটিভি জানায়, আজ থেকে শহরের সব বাসিন্দাদের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হবে। ইতোমধ্যে লকডাউন পরিস্থিতিতে টাটকা খাবারের অভাব ও যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ নিয়ে সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের মনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
২০১৯ এর শেষের দিকে চীনের উহান শহরে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
Comments