মশার ওষুধ কেনায় বরাদ্দ নেই

করোনা মহামারির মধ্যে দেশে যখন ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে, ঠিক তখন প্রথম শ্রেণির ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় ডেঙ্গুসহ মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে কোনো বরাদ্দ নেই।
১৮৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই পৌরসভায় বসবাসরত প্রায় দুই লাখ মানুষের জীবন মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ। তাদের মনে ডেঙ্গুর আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

পৌর এলাকার বাসিন্দারা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করেও মশা থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। মশার যন্ত্রণায় শিশু থেকে বৃদ্ধ— সবাই অতিষ্ঠ। শহরের মাঝখানে টাউন খালের নানা স্পটে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা দীর্ঘদিনেও পরিষ্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ড ও ৩৩টি মহল্লা নিয়ে প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় লোকসংখ্যা প্রায় দুই লাখ।
স্থানীয়রা জানান, শহরের মাঝখানে টাউন খালটি একসময় প্রবাহমান ছিল। কিন্তু, দীর্ঘদিনের দখল ও দূষণে এটি এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। পানিতে ময়লার স্তূপ জমে মশা জন্ম নিচ্ছে। তাছাড়া, তেমন বেশি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবেও মশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অন্য দিকে, দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভাও মশা নিধন করছে না। ফলে বেড়ে গেছে মশার উপদ্রব।
শহরের পাওয়ার হাউজ রোড এলাকার বাসিন্দা সোহেল সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগে পৌরসভার উদ্যোগে মশার ওষুধ দেওয়া হতো। কিন্তু, গত চার-পাঁচ বছর ধরে তা দেখা যাচ্ছে না। টাউন খালও পরিষ্কার করা হচ্ছে না। মশা বেড়েই চলছে।'
সরেজমিনে পৌরসভার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ মহল্লাতেই ছোট ছোট ডোবা-নালা আছে। আবর্জনা ও দখলে টাউন খালটিও ড্রেনে পরিণত হয়েছে। সেখানে ময়লার স্তূপে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা।
বণিকপাড়া মহল্লার বাসিন্দা শারমিন আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঘরে মশার উপদ্রব বেড়ে যায়। দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।'
কান্দিপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাসান রাব্বি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শুধু রাতে নয়, দিনেও ঘর একটু অন্ধকার হলেই মশা কামড়াচ্ছে। অনেক সময় দিনেও মশারি ব্যবহার করতে হচ্ছে।'
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তাসকিন হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত কয়েক বছরের মধ্যে এবার মশার উপদ্রব অনেক বেশি। কয়েল, স্প্রে— কোনকিছু দিয়েই কাজ হচ্ছে না।'
যোগাযোগ করা হলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার কনজারভেটিভ ইন্সপেক্টর মুস্তাফিজুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। পৌরসভার সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।'
পৌরসভার সচিব মো. শামসুদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মশা নির্মূলে এ বছর কোনো বরাদ্দ নেই। সাম্প্রতিক হেফাজতে ইসলামের হামলায় পৌর স্টোর রুমে থাকা মশার ওষুধ ও স্প্রে মেশিন পুড়ে গেছে।'
বর্তমানে তারা নিজস্ব তহবিল থেকে এই কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বলে জানান তিনি।
Comments