আবার চালু হতে পারে ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট: বেবিচক

‘আমরা চেয়েছিলাম অক্টোবরের মধ্যে নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করতে। তবে ফ্লাইটের অনুমতির ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে হয়।’
বিমান
ফাইল ছবি

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন, তারা এ বছরই আবারও ঢাকা-নিউইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আশাবাদী।

আজ শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের 'এটিজেএফবি ডায়ালগে' এ কথা বলেন তিনি। ডায়ালগের আয়োজন করে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ।

নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা চেয়েছিলাম অক্টোবরের মধ্যে নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালু করতে। তবে ফ্লাইটের অনুমতির ক্ষেত্রে এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানকে আবেদন করতে হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সময়মত আবেদন না করায় প্রক্রিয়াটা পিছিয়ে গেছে। আমরা বিমানকে লিখিতভাবে জানিয়েছি এ বিষয়টি। তারা বিলম্বে আবেদন করেছে। কোভিডের কারণেও কিছুটা পিছিয়েছে এ প্রক্রিয়া। তবে আমি এ বছরেই নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আশাবাদী।'

২০০৬ সাল পর্যন্ত বিমান নিউইয়র্কে ফ্লাইট পরিচালনা করেছিল। এরপর এ রুটে বিমান পরিচালনা বন্ধ করে দেওয়া হয় অর্থনৈতিক কারণে।

হেলিকপ্টারের অপারেটরদের হ্যাঙ্গারের ভাড়া নির্ধারণের বিষয়ে মো. মফিদুর রহমান বলেন, 'হেলিকপ্টার খাত দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা তাদের স্বল্প ভাড়া নির্ধারণ করেছি। যেহেতু এটা সরকারি জায়গা, পৃথিবীর কোনো দেশেই এগুলো ফ্রিতে দেয় না। তাই আমরাও ভাড়া নির্ধারণ করেছি।'

'তবে তাদের ভাড়া অনেক কম ধরা হয়েছে। আমরা প্রস্তাব করেছি, অর্থ মন্ত্রণালয় এই ভাড়া চূড়ান্ত করবে। তবে আমরা তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সহানুভূতিশীল হয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছি', যোগ করেন তিনি।

বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'আচরণের বিষয়ে বিমানবন্দরে কর্মরতদের এ পর্যন্ত ১৯টি ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক নিজে দরবার করে তাদের নির্দেশনা দিচ্ছে। যারা খারাপ ব্যবহার করছে তাদের সরিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে আর্থিক জরিমানাও করা হচ্ছে।'

বিমানবন্দরে নানা কারণে আনসার সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দাবি করে— সাংবাদিকদের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'টাকা চাওয়ার বিষয়টি অসত্য না। আমরা দেখছি এসব ঘটনা, প্রমাণ পেয়ে আমরা চাকরিচ্যুত করেছি। যেহেতু আমাদের জনবল নেই, তাই অন্য সংস্থা থেকে জনবল এনেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হচ্ছে। তারপরও আমরা তাদের কাউন্সিলিং করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে আনসারের মহাপরিচালকের সঙ্গেও কথা বলেছি আমি।'

বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনাকে আরও নমনীয় করতে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু, মুক্তিযুদ্ধ, বৃদ্ধ ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সার্ভিস দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলে জানান বেবিচক চেয়ারম্যান।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক হাব করা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'আমরা ম্যাস্টার প্ল্যান করে কাজে নেমে গিয়েছিলাম। জায়গা অধিগ্রহণের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এজন্য ৫ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে সরকার প্রায়োরিটিতে রাখতে পারেনি।'

বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নির্মাণ প্রসঙ্গে মফিদুর রহমান বলেন, 'একটি ফিজিবল স্ট্যাডি করা হয়েছিল, জায়গা নির্বাচন করা হয়েছিল। তবে বর্তমানে এই প্রকল্প সাস্পেনশনে আছে। বর্তমান বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর চলমান অনেকগুলো প্রকল্প আছে।পরে যদি প্রয়োজন হলে এই প্রকল্প নিয়ে কাজ হবে।'

বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়ে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, '২০২৪ সালে আইকাও আমাদের ফুল স্কেলে অডিট করবে। ভুল তথ্যের সংবাদ হলে এই অডিটে আমাদের জন্য নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।'

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেবিচকের সদস্য (পরিকল্পনা) এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, সদস্য (এটিএম) শাহ কাউসার আহমেদ চৌধুরী, সদস্য (প্রশাসন) মো. মাহবুব আলম তালুকদার,সদস্য (নিরাপত্তা) গ্রুপ ক্যাপ্টেন আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী, প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক প্রমুখ।

Comments