ওপাল গ্লাস তৈরিতে প্রাণ-আরএফএলের ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ
![ওপাল গ্লাস তৈরিতে প্রাণ-আরএফএলের ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ ওপাল গ্লাস](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/images/2023/12/25/pran_rfl.jpg?itok=WOAeqm_o×tamp=1703493232)
ওপাল গ্লাস ও পলিস্টাইরিন শিট তৈরির কারখানা স্থাপনে ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
ওপাল গ্লাস হলো ফ্লোরাইড যুক্ত আলংকারিক ওপালেসেন্ট কাঁচ। এটি দিয়ে ডিজাইন করা বাটি, পান পাত্র ও অলঙ্কার তৈরি করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতিবছর দেশে এ ধরনের কাঁচ বিক্রির পরিমাণ প্রায় ১২ শ কোটি টাকা এবং এটি ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে।
বর্তমানে দেশে নাসির ওপাল গ্লাস অ্যান্ড ক্রোকারিজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ ধরনের কাঁচ তৈরি করে। দেশীয় চাহিদা মূলত চীন থেকে আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
স্বচ্ছ থার্মোপ্লাস্টিক পলিস্টাইরিনকে বেশি তাপে তরল করা হয়। পলিস্টাইরিন শিটের মতো প্লাস্টিকের ইনজেকশন ছাঁচের মাধ্যমে নানান রূপে তা আবার শক্ত করা যায়।
খাদ্য ও পানীয় পণ্যের প্যাকেজিং, চিকিত্সা সামগ্রী, অ্যাপ্লাইয়েন্স, প্যানেল এবং কেসিংয়ের মতো অনেক কিছুতে এ ধরনের কাঁচ ব্যবহার করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর দেশে পলিস্টাইরিন কাঁচ বিক্রির পরিমাণ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ও এটি ১০ শতাংশেরও বেশি হারে বাড়ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ইনসুলেশন প্রোডাক্টস, শিমু ইপিএস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও ডায়মন্ড ইনসুলেশন লিমিটেড দেশে বিক্রির জন্য এবং ওয়ালটন ও স্যামসাং তাদের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য এটি উত্পাদন করছে।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক-২-এ ওপাল গ্লাস তৈরির জন্য তিনটি ও পলিস্টাইরিন শিটের জন্য একটি কারখানা করা হয়েছে।'
তিনি জানান, আগামী জানুয়ারিতে ওপাল গ্লাসের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে।
বিনিয়োগের খাত সম্পর্কে তিনি বলেন, 'জমি, যন্ত্রপাতি, ইউটিলিটি সংযোগ ও অন্যান্য জিনিস কিনতে খরচ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ নিজেদের এবং বাকিটা ব্যাংক ঋণ হিসেবে নেওয়া হচ্ছে।'
প্রাণ-আরএফএল ওপাল গ্লাসওয়্যার রপ্তানির পরিকল্পনা করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'কুমিল্লায় আমাদের পলিস্টাইরিন শিট তৈরির কারখানা আছে।'
রাজধানী থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ৪০ একর জমির ওপর নির্মিত হচ্ছে হবিগঞ্জ শিল্পপার্ক-২।
বিপণন পরিচালক কামাল ডেইলি স্টারকে আরও বলেন, 'শিল্পপার্কটি আগামী মার্চে উদ্বোধন করা হবে। এখানে প্রায় এক হাজার কর্মসংস্থান হওয়ার পাশাপাশি এলাকার সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।'
২০১৩ সালে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ৩০০ একর জমির ওপর প্রাণ-আরএফএলের শিল্পপার্ক-১-এ উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে সেখানে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন।
'নতুন পণ্য তৈরি ও পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং দেশে-বিদেশে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা উত্পাদন সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করছি,' যোগ করেন তিনি।
সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটি প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য, প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিক্স, হালকা প্রকৌশল পণ্য, টয়লেট্রিজ, আসবাবপত্র, নন-লেদার পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন করছে।
'প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের অন্যতম লক্ষ্য গ্রামাঞ্চলে জনসাধারণের জন্য কর্মসংস্থান করা' উল্লেখ করে কামরুজ্জামান আরও বলেন, 'শ্রমশক্তির সহজলভ্যতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।'
Comments