তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

জ্বালানির দাম কমানোর সুফল ব্যবসায়ীদের পকেটে যাবে: অধ্যাপক শামসুল আলম

ডিজেল-পেট্রল-অকটেন-কেরোসিনের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সিদ্ধান্তের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেছেন, অবৈধ উপায়ে দাম বাড়ানো যেমন ভোক্তা স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়, তেমনি অবৈধ উপায়ে দাম কমানোও ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করে না।
ক্যাব’র জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। ছবি: সংগৃহীত

ডিজেল-পেট্রল-অকটেন-কেরোসিনের দাম লিটারে ৫ টাকা কমানোর সিদ্ধান্তের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেছেন, অবৈধ উপায়ে দাম বাড়ানো যেমন ভোক্তা স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্য নয়, তেমনি অবৈধ উপায়ে দাম কমানোও ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করে না।

তিনি বলেন, 'অবৈধ উপায়ে দাম বাড়িয়ে আবার কমানো মানুষকে বিভ্রান্ত করার নামান্তর। এ ধরনের সিদ্ধান্ত ‍বিপিসির অনৈতিক ও লুণ্ঠনমূলক মুনাফা করার যে প্রবণতা, সেটিকে জিইয়ে রাখবে।'

'বিপিসি যে তার মুনাফা বাড়ানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে, তার প্রমাণ আমরা ইতোমধ্যেই পেয়েছি। ১৫টি ব্যাংকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ডিপোজিট করেছে তারা, ব্যবসা করছে, বিনিয়োগ করছে। একটা কোম্পানির ২৫ হাজার কোটি টাকা এভাবে সঞ্চয় হয়ে যায়, যা খরচের কোনো জায়গা নেই', বলেন তিনি।

এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বলেন, 'আমাদের কাছ থেকে একটি জাতীয় কোম্পানি (বিপিসি)- সেটি তো আমাদেরই কোম্পানি- আমাদের কাছ থেকে ন্যায্য ও যৌক্তিক মূল্য অপেক্ষা বেশি টাকা নিচ্ছে, কত নিয়েছে সেটা আমরা এখনো জানি না।'

'ভর্তুকি প্রত্যাহারের অজুহাতে এর আগেরবারও তারা (বিপিসি) এতটা দাম বাড়িয়েছে, আর এখন কমানোটাও তাদের একই প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা। তাদের ওই সিদ্ধান্তটিকে টেকসই করার জন্য লোক দেখানোভাবে ৫ টাকা কমিয়েছে। ৫-৬ বছর আগেও লোক দেখানোর জন্য ৩ টাকা কমানো হয়েছিল। যদিও তখন ৩ টাকার একটা মূল্য ছিল, এখন ৫ টাকার তো কোনো মূল্যই নেই, ফকিরকে ভিক্ষাও দেওয়া যায় না', যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, 'যে বিবেচনায় এটা করা হয়েছে, সেটা কতটা সুবিবেচনার, কতটা অবিবেচনার, সেটি ভোক্তারা বিবেচনা করবেন। আমি শুধু এতটুকুই বলতে চাই যে, জনস্বার্থে যদি মূল্য বাড়ানো বা কমানোর প্রয়োজন হয়, তবে কেন তারা কমিশনের (বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন) কাছে যায় না। রাতের অন্ধকারে চার দেয়ালের মধ্যে নিজের মতো করে হিসাব-নিকাশ করে স্বার্থ-সংঘাতভাবে এ সিদ্ধান্ত কেন নেয়?'

'জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর অন্যান্য যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে, তা যে আর কমবে না, সেটা অবধারিত সত্য। ২০১৬ সালে ৩ টাকা কমানোর ফলে শুধু বাসমালিকরা ৯০০ কোটি টাকা লাভ করেছিল, এখন ৫ টাকা কমানোর ফলে তারা ভাড়া আর কতো কমাবে। ওই ৫ টাকাও তাদের পকেটেই ঢুকবে। মানে- দাম কমানোর সুফল পুরোটাই ব্যবসায়ীদের পকেটেই যাবে। আর দ্রব্যমূল্যের ওপর যে কী প্রভাব পড়বে, তা আমার বোধগম্য নয়', বলেন তিনি।

Comments