ভারতে সর্বদলীয় বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ব্রিফিং দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর

বৈঠকে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে জয়শঙ্কর বলেন, 'এটি একটি চলমান ঘটনা। সরকার সঠিক সময় বেছে নিয়ে সে অনুযায়ী উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।'
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল ছবি: রয়টার্স

বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার একটি সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেছে।

আজ মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

ভারতের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় প্রতিবেশী দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত কোন অবস্থান নিতে চলেছে, সর্বদলীয় বৈঠকে জয়শঙ্কর তার ব্যাখ্যা দিতে পারেন বলে মত দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। 

বৈঠকে আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে জয়শঙ্কর বলেন, 'এটি একটি চলমান ঘটনা। সরকার সঠিক সময় বেছে নিয়ে সে অনুযায়ী উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।'

তিনি আরও জানান, নয়াদিল্লি বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিক ও সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বাসিন্দারা যাতে নিরাপদ থাকে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন। 

এই বৈঠকে জয়শঙ্করের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু অংশ নেন। 

ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গেও আলাদা করে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন জয়শঙ্কর।

সোমবার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি লকহিড সি১৩০জে হারকিউলিস উড়োজাহাজে চেপে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।

বিকেল ৫টা বেজে ৩৫ মিনিটে উত্তর প্রদেশের গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন বিমান ঘাঁটিতে অবতরণের পর সন্ধ্যায় ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন।

হাসিনা ভারতে পৌঁছানোর পর রাতেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত এই বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র,  রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) প্রধান রবি সিন্‌হা এবং গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি) পরিচালক তপন ডেকা।

ভারতের একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হাসিনা ভারতে থাকবেন না। তাকে সাময়িকভাবে ভারতের অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ সময় তিনি সরকারের কাছ থেকে যথোপযুক্ত লজিসটিক সহায়তা পাবেন।

ইতোমধ্যে তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। তবে এখনো যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে সাড়া পাননি তিনি।

এ বিষয়টির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভারতে অবস্থান করবেন বলেই ভাবছেন ভারতের বিশ্লেষকরা।

Comments