লুট করা মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ‘হত্যাকারী’ গ্রেপ্তার
নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় গত ২৯ অক্টোবর ভোরে ছুরিকাঘাতে নিহত এক তরুণ পোশাক কর্মীর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রেস ব্রিফিং করে দুই জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল। তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুজন ছিনতাইকারী। তারা লুট করে মোবাইল ফোনটি ৩০০ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ওই মোবাইলের সূত্র ধরে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- শরীয়তপুর জেলার সখিপুরের সাগর (২৩) এবং ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কাউটাইলের জয়চান ওরফে বিশাল (২৪)। গত সোমবার দিবাগত রাতে ফতুল্লা থানার জামতলা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা দুজনই ওই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত শনিবার ভোরে চাষাঢ়ায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন জয়নুর রহমান জনি (২৪)। তিনি কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের প্রাগপুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেন লালটুর ছেলে। নারায়ণগঞ্জের বিসিক শিল্পাঞ্চলের একটি পোশাক কারখানায় জুনিয়র কোয়ালিটি ইন-চার্জ পদে চাকরি করতেন তিনি।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সদর সার্কেলের ওসি আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোয়েন্দা তৎপরতা ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। ছিনতাইকারীরা ভেবেছিল ভিকটিমের কাছে টাকা-পয়সা ও দামি কিছু পাবেন। সেরকম কিছুই তারা পাননি। ভিকটিমের কাছ থেকে ছিনতাই করা মোবাইল ফোনটি তারা মাত্র ৩০০ টাকায় বিক্রি করে দেন। এই মোবাইলের সূত্র ধরেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।'
ব্রিফিংয়ে এসপি গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, কুষ্টিয়ায় নিজ গ্রামে ছুটিতে গিয়েছিলেন নিহত ওই তরুণ। ঘটনার সময় ভোররাতে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ায় বাস থেকে নামেন। সেখান থেকে হেঁটেই বিসিকের দিকে যাচ্ছিলেন। চাষাঢ়ায় ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করেন।
এই ঘটনায় গ্রেপ্তার সাগর একজন চিহ্নিত ছিনতাইকারী উল্লেখ করে এসপি বলেন, 'শহরের চাষাঢ়ায় আট থেকে দশজনের একটি ছিনতাইকারী দল আছে। এই দলে নারীও আছেন। ছিনতাইকারী দলটিকে নেতৃত্ব দেয় সাগর। এ এলাকায় কেউ কোন ছিনতাই করলে সাগরকে ভাগ দিতে হতো। ছিনতাইকারী চক্রটির অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে এসপি বলেন, 'ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পুলিশের স্থাপনা থাকতে পারে। স্থাপনা থাকলেও পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ডিউটিতে থাকেন। তারপরও রাতের বেলা নারায়ণগঞ্জ যাতে অরক্ষিত না থাকে সেজন্য পুলিশের তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কেউ যাতে দায়িত্বে ফাঁকি না দেন সে বিষয়েও কড়া নির্দেশনা আছে।'
জয়নুর রহমান হত্যার ঘটনায় রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে এবং রেলওয়ে পুলিশ মামলার তদন্ত করছে জানিয়ে এসপি বলেন, 'মরদেহটি রেললাইন থেকে উদ্ধার করায় রেলওয়ে থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই আসামিকে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।'
Comments