ঈদের দিন গণপিটুনি দিয়ে দুই ভাইকে হত্যা, বাবা-মা আহত

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালে গণপিটুনিতে দুই সহোদর নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাদের বাবা ও মা আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে ঘোড়াশালের ভাগদী গ্রামের কুড়ইতলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশের দাবি, চোর সন্দেহে তাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে।
তবে, নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, চাঁদা না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত হয়েছেন রাকিব (২৫) ও সাকিব (২০)। আহত হয়েছেন তাদের বাবা আশরাফ উদ্দিন (৫০) ও মা রাবেয়া (৪৫) খাতুন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার সকালে ভাগদীর কুড়ইতলী এলাকায় অটোরিকশার ব্যাটারি চুরি করতে এসেছে সন্দেহে স্থানীয়রা হিমেল (২৩) নামে একজনকে মারধর করে। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিকেলে রাকিব ও সাকিব ঘটনাস্থলে গিয়ে হিমেলের পক্ষে প্রতিবাদ জানায় এবং একপর্যায়ে অটোরিকশা চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করে চলে আসে।
সন্ধ্যায় আবারও তারা কুড়ইতলী এলাকায় গেলে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকরা তাদের আটক করে মারধর করে।
এ ঘটনা জানতে পেরে বাবা-মা রাকিব ও সাকিবকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়।
আহত অবস্থায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন এবং রাকিবকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সুদীপ কুমার সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিহতদের মাথা ও শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সাকিব হাসপাতালে আনার আগেই মারা যান। রাকিব সংকটাপন্ন অবস্থায় ছিলেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।'
নিহতদের চাচি হাজেরা বেগম অভিযোগ করেন, 'এলাকার কিছু সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছিল। চাঁদা না দেওয়ায় তারা ঈদের দিন রাকিব ও সাকিবকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।'
পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, 'ঈদের দিন সকালে চোর সন্দেহে একজনকে মারধর করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে সন্ধ্যায় গণপিটুনির মুখে পরেন তারা এবং এতে দুই ভাই নিহত হন। তদন্ত চলছে, তবে এখনো চাঁদাবাজির অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।'
Comments