বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিএসএফ’র বিরুদ্ধে

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা সীমান্তে এক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা সীমান্তে এক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে।

আজ রোববার ভোরে উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ি ভুটিয়ামঙ্গল সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শরিফুল ইসলাম সাদ্দাম গোতামারী ইউনিয়নের দৈখাওয়া সীমান্ত গ্রামের আছির উদ্দিনের ছেলে।

তবে তাকে বিএসএফ সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করেছেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আজ সকালে ভুটিয়ামঙ্গল সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশ ভূখণ্ড থেকে শরিফুলকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর চিকিৎসার জন্য রংপুরে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত শরিফুলের স্ত্রী মৌসুমী বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি শুনেছেন- স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে তার স্বামী ভারতে যান গরু আনতে। তারা গেন্দুকড়ি সীমান্তে ৯০১ নম্বর মেইন পিলারের কাছ দিয়ে ভারতের কোচবিহার জেলার সিতলকুচি থানার নওহাটি এলাকায় গিয়েছিলেন। ভারত থেকে গরু আনার সময় তার স্বামী টহলরত বিএসএফ সদস্যদের হাতে আটক হন। তাকে বিএসএফ সদস্যরা ক্যাম্পে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে অচেতন অবস্থায় ভুটিয়ামঙ্গল সীমান্তে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ফেলে রেখে যায়।

'বিএসএফ সদস্যদের নির্যাতনে আমার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তার সারা শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। সে অচেতন থাকায় আমাদের কিছুই বলে যেতে পারেনি', বলেন তিনি।

গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোনাব্বেরুল হক ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিহত শরিফুল অবৈধভাবে ভারত থেকে গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার সঙ্গে আর যারা গরু আনার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন সেটা এখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশ-ভারতের চোরাকারবারিদের দ্বন্দ্বের জেরেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। তবে শরিফুলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে মনে হয়েছে, তাকে বিএসএফ সদস্যরা নির্যাতন করেছেন। এ ঘটনায় বিজিবি ও পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে।'

গেন্দুকড়ি বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার আনোয়ারুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শারীরিক নির্যাতনে শরিফুলের মৃত্যু হয়েছে এটা নিশ্চিত। তবে বিএসএফ সদস্যরা এ নির্যাতন করেছেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে।'

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শরিফুলের মরদেহ রোববার বিকেলে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তাকে অচেতন ও আহত অবস্থায় সীমান্ত এলাকা থেকে স্থানীয়রা উদ্ধার করেছিলেন। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে বিএসএফ সদস্যরা তাকে নির্যাতন করেছেন কি না, সে বিষয়ে এখনো জানা যায়নি। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।'

Comments