‘আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফল জনগণ পেতে শুরু করেছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফল জনগণ পেতে শুরু করেছে। আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায়, নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করে এনএলজি আমদানির ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত আজ মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে গ্যাসের চুলায় রান্না হয়।’
আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফল জনগণ পেতে শুরু করেছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ইউএনবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'আমাদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার ফল জনগণ পেতে শুরু করেছে। আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুতের আওতায়, নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত চাহিদা মেটানোর জন্য আমরা এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করে এনএলজি আমদানির ব্যবস্থা করেছি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত আজ মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে গ্যাসের চুলায় রান্না হয়।'

আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। 

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের চতুর্থ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে এ ভাষণ দেন। 

শেখ হাসিনা আরও বলেন, '২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি। তখনো বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা অবস্থা চলছিল। চালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ছিল আকাশচুম্বী। অন্যদিকে মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা ছিল নিম্নমুখি। বিদ্যুতের অভাবে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলতো। গ্যাসের অভাবে শিল্প-কারখানার মালিকরা যেমন হাহাকার করতো। তেমনি চুলা জ্বলতো না মানুষের বাড়িতে। সারসহ কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি এবং জ্বালানী তেলের অভাবে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছিল। এমনই এক অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই।'

নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার রূপকল্প-২০২১ প্রনয়ণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'জনগণের বিপুল ম্যানডেট নিয়ে আমরা সরকার গঠনের পর আশু করণীয়, স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রনয়ণ করি। দেশের আর্থ-সামাজিক উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করি। স্থবির অর্থনীতিকে সচল করতে শুরুতেই কৃষি, জ্বালানি, বিদ্যুৎসহ কয়েকটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে আমরা সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি ছোট-বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করি।' 

'খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে আমরা মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে রাসায়নিক সারের দাম কমিয়ে দিই। আরও ২ দফা দাম কমিয়ে কৃষকের ক্রয় ক্ষমতার আওতায় আনা হয়। এভাবে প্রতিটি খাতে আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিতের উদ্যোগ নেই। এভাবে রূপকল্প ২০২১-এর পর আমরা রূপকল্প ২০৪১ এবং বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রনয়ণ করেছি।' 

তিনি বলেন, 'রূপকল্প ২০২১-এ আমরা অন্যান্য লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পাশাপাশি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলাম। আজকে সন্তুষ্ট চিত্তে বলতে পারি; আমরা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সক্ষম হয়েছি।' 

'রূপকল্প ২০৪১-এর লক্ষ্য হচ্ছে, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে প্রতিষ্ঠিত করা।' 

শেখ হাসিনা বলেন, 'বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-এর লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ূ পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবিলা করে বাংলাদেশকে একটি টেকসই-উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে টিকিয়ে রাখা।' 

আমাদের সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনার ফল জনগণ পেতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নিমাণ সম্পন্ন করেছি। সেই সেতু দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়কপথে ঢাকা ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।'

'গত ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছি। কিছুদিনের মধ্যে শুধু বাংলাদেশেই নয়, চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়কপথ বঙ্গুবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হবে।' 

'পাবনার ঈশ্বরদী রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আমরা ২০১৮ সালের মে মাসে মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইন বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি।'     

শেখ হাসিনা বলেন, 'স্বাধীন সার্বভৌম দেশ প্রতিষ্ঠায় এদেশের মহৎ এক বৃহৎ অর্জনসমূহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই অর্জিত হয়েছে।' 

'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করি মহান স্বাধীনতা। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের মধ্যে দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর দ্বারপ্রান্তে।'

   

Comments