খুলনায় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট, ১৪ জেলায় সরবরাহ বন্ধ

বাংলাদেশ ট্যাংকলরী ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরী শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
খুলনায় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করায় খালিশপুর কাশিপুর পদ্মা তেল ডিপো থেকে ছাড়ছে না তেলের ট্যাংকলরী। ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩। ছবি: হাবিবুর রহমান/স্টার

জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বাড়ানোসহ ৩ দফা দাবিতে আজ রোববার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করছেন খুলনার জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ৩ দফা দাবি হচ্ছে—জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাংক-লরির অর্থনৈতিক জীবনকাল ৫০ বছর করা, জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর প্রচলিত কমিশন কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা, জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট বিধায় প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।

বাংলাদেশ ট্যাংকলরী ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতি, খুলনা বিভাগীয় ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পদ্মা মেঘনা ও যমুনা ট্যাংকলরী শ্রমিক কল্যাণ সমিতি এই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।

বাংলাদেশ জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির খুলনা বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুরাদ হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে আনুপাতিক হারে জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন বাড়াতে হবে। তা না হলে আমরা টিকে থাকতে পারবো না।'

'আমরা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছি' উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'এর ফলে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ৩ ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ এবং খুলনা বিভাগের ১০ জেলা ও বৃহত্তর ফরিদপুরের ৪ জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বৃদ্ধিসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে সরকার দাবি পূরণ না করায় আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে।'

খুলনায় জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট
ধর্মঘট শুরুর আগের রাতে খুলনা মহানগরীর পাওয়ার হাউজ মোড় কেসিসি তেল পাম্পে ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

তেল সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকায় গতকাল রাত থেকেই খুলনার পাম্পগুলোতে ভিড় বাড়তে থাকে। কয়েকটি পাম্প ঘুরে দেখা যায় ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল নিয়ে তেলের জন্য দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই। খুলনার নতুন রাস্তার মোড়ের এলেনা পেট্রোল পাম্পের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।

খুলনা নগরীর পাওয়ার হাউস মোড় এলাকায় সিটি কর্পোরেশনের পেট্রোল পাম্পেও দীর্ঘ লাইন ছিল মধ্যরাত পর্যন্ত।

আজ সকালে খালিশপুর, দৌলতপুর, বয়রা, ফুলবাড়ী গেটের কয়েকটি পেট্রোল পাম্প ঘুরে দেখা যায় সেখানে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। খালিশপুরের ৩টি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা যমুনা থেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। সেখানে কয়েক শ ট্যাংক-লরি দাঁড়িয়ে আছে।

গত ২৩ আগস্ট খুলনার নিউমার্কেট এলাকায় আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় জ্বালানি তেল বিক্রির ওপর কমিশন বাড়ানোসহ ৩ দফা দাবি পূরণে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।

Comments