বেনাপোল হয়ে ভারত: ৮-৯ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ অনেকে

বেনাপোল বন্দরে ভারত ভ্রমণকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভিড়। ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল ফিতরের টানা পাঁচদিনের সরকারি ছুটিতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের চাপ বেড়েছে অনেক বেশি। ফলে, বেনাপোল ও ভারতের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে সবমিলিয়ে আট থেকে নয় ঘণ্টা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের।

আজ শুক্রবার ভারতগামী যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই গরমে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় তাদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

আজ বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রায় আট হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন, যেখানে গড়ে এই পথে প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার যাত্রী ভারতে যাওয়া-আসা করেন।

এমনকি ঈদের দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন।

অধিকাংশ পাসপোর্ট যাত্রী ঈদুল ফিতর ও পয়লা বৈশাখের লম্বা ছুটিতে ভ্রমণ, চিকিৎসা ও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন ভারতে।

ভারতগামী যাত্রীদের বাংলাদেশে পাসপোর্টের অনুষ্ঠানিকতা শেষে করতে সময় কম লাগলেও ওপারে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসে সময় লাগে সাত থেকে আট ঘণ্টা। পেট্রাপোল থেকে যাত্রীদের লাইন বাংলাদেশ সীমান্তের ভেতরে পর্যন্ত চলে আসে।

ভারতে যেতে একজন পাসপোর্ট যাত্রীকে ভ্রমণ কর বাবদ এক হাজার টাকা ও বন্দরের টার্মিনাল ফি বাবদ ৫৫ টাকা পরিশোধ করতে হয়।

যাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হলেও যাত্রী সেবার মান বাড়েনি বলে অভিযোগ যাত্রীদের। এমনকি যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে তারা নানা দুর্ভোগের শিকার হন বলে জানান।

ভারতগামী যাত্রীরা যখন অভিযোগ করছেন কাঙ্ক্ষিত সেবা না পাওয়ার, তখন বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, সেবার মান বাড়াতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।

আজ দুপুর ১২টার দিকে কথা হয় যশোরের পাসপোর্ট যাত্রী মনির হোসেনের সঙ্গে। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'সকাল ৭টায় এসেছি বেনাপোলে। সেখানে ইমিগ্রেশন শেষ করতে সময় লেগেছে ২ ঘণ্টা। এরপর ভারতে গিয়ে নোম্যান্স ল্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছি তিন ঘণ্টা ধরে। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছি।'

ফরিদপুরের পাসপোর্ট যাত্রী সম্রাট হোসেনের অভিযোগ, 'ঢাকা-কলকাতা সরাসরি বাসযাত্রীদের জন্য কোনো লাইন নেই। তারা দুদেশের ইমিগ্রেশনকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে সিরিয়াল ছাড়াই দ্রুত চলে যাচ্ছে। আর আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছি।'

তিনি বলেন, 'ভারতগামী যাত্রীদের অধিকাংশই বৃদ্ধ, রোগী ও শিশু। এদিকে একটু লক্ষ্য রাখা দরকার। সবাই তো বেড়াতে ভারত যায় না। অধিকাংশই যায় চিকিৎসা নিতে। এভাবে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের খুব খারাপ অবস্থা হয়ে যায়।'

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি মো. কামরুজ্জামান জানান, 'ঈদের লম্বা ছুটিতে ভারতগামী যাত্রী সংখ্যা হয়ে গেছে দ্বিগুণ। সব দেখে এত যাত্রীর পাসপোর্টে সিল দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।'

তিনি বলেন, 'আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় আট হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন।'

'গত তিনদিনের বেনাপোল দিয়ে ২৪ হাজার যাত্রী ভারতে গেছে,' যোগ করেন তিনি।

বেনাপোল বন্দরের ডাইরেক্টর রেজাউল করিম বলেন, 'যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ঈদের আগে দুদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতীয় ইমিগ্রেশনে লোকবল বৃদ্ধি করতে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা সেটা না করার ফলে যাত্রী দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
tax collection target for IMF loan

Talks with IMF: Consensus likely on exchange rate, revenue issues

The fourth tranche of the instalment was deferred due to disagreements and now talks are going on to release two tranches at once.

10h ago