তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে কূটনৈতিক চেষ্টা অব্যাহত আছে: প্রধানমন্ত্রী

সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, কিছু আইনি জটিলতা থাকলেও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একই সঙ্গে চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, 'তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য জোর কূটনৈতিক ও আইনি প্রচেষ্টা চলছে।'

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আজ জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য বেগম ফরিদা ইয়াসমীনের লিখিত প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান। প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তবে, সকল জটিলতা আইনি প্রক্রিয়া নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ও তাকে প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।'

'আশা করা যায়, এই প্রক্রিয়ায় ফলাফল আমরা অচিরেই দেখতে সক্ষম হব,' যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগেুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমানসহ ১৫ আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ বাংলাদেশের মাটিতে মারা গেছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে।

তিনি জানান, এছাড়াও পলাতক আসামিরা যে সকল দেশে অবস্থান করছে সে সকল দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে সংসদকে জানান। তিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে তাদের ব্যক্তিগত সহযোগিতাও কামনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে মেজর (অব.) নূর চৌধুরী বর্তমানে সপরিবারে কানাডায়, আব্দুর রশিদ ও মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল ইসলাম ডালিম পাকিস্তান বা লিবিয়ায়, লে. কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী আমেরিকা এবং রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান ভারতে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এছাড়া লে. কর্নেল (অব.) আজিজ পাশা জিম্বাবুয়ে অবস্থানকালে মারা যান বলে জানা যায়।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত ১২ জন আসামির মধ্যে ছয় জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানান সরকার প্রধান।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের লিখিত জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবহার ও সঠিকভাবে রিসাইকেল করার লক্ষ্যে সরকার একটি কার্যকর নীতিমালা গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান ও পরবর্তীতে অংশীজনের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। ই-বর্জ্য রিসাইকেলের জন্য প্লান্ট তৈরি করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

ভোলা-২ আসনের আলী আজমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ৫৭৫টি ইউনিটের মাধ্যমে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ২৭৪ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্ত করে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড) প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী প্রতিবন্ধী ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫৯৪ জন।

ফরিদা ইয়াসমিনের অপর এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে সংসদ নেতা জানান, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে এ পর্যন্ত কল্যাণ অনুদান ও করোনাকালীন আর্থিক সহায়তা হিসেবে সারা দেশে ১৩ হাজার ৫৮২ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque alleges political obstruction in DSCC mayoral appointment

Announces establishment of 'Mayor's Cell' to monitor service delivery in the city

1h ago