৩ বছরে সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ৮টি

সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। সরকারিভাবে পরিচালিত সর্বশেষ বাঘশুমারি থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনে বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধির তথ্য উঠে এসেছে।

সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। সরকারিভাবে পরিচালিত সর্বশেষ বাঘশুমারি থেকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনে বাঘের সংখ্যাবৃদ্ধির তথ্য উঠে এসেছে।

বাঘশুমারির সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না শর্তে বলেন, ২০১৮ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়ে ১১৪ হয়েছে। ২০১৫ সালের বাঘশুমারিতে ১০৬টি বাঘ থাকার কথা জানা গিয়েছিল।

বাঘ নিয়ে সর্বশেষ এই জরিপের ফলাফল আগামীকাল বুধবার রাজধানীর বন ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা বাঘের সংখ্যা জানতে সুন্দরবনকে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা এই তিন অংশে ভাগ করে নিয়ে জরিপ চালানো হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরা অংশে জরিপ চলে ২০১৭ সালে। এর পরের বছর খুলনা ও বাগেরহাট অংশে জরিপ পরিচালনা করা হয়।

বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, সুন্দরবনে যে অঞ্চলগুলোতে বাঘের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি এমন ১,৬৫৯ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ‘ক্যামেরা ফাঁদ’ পদ্ধতিতে জরিপ চালানো হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরায় ১,২০৮ বর্গকিলোমিটার, খুলনায় ১৬৫ বর্গকিলোমিটার ও বাগেরহাটের শরণখোলায় ২৮৬ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে জরিপে অন্তর্ভুক্ত রাখা হয়েছিল।

বাঘশুমারির এই পদ্ধতিতে ক্যামেরার সামনে দিয়ে বাঘ চলাচল করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার ছবি উঠে যায়। পরে এসব ছবি বিশ্লেষণ করে বাঘের সংখ্যা নিরূপণ করা হয়। সর্বশেষ এই জরিপে সুন্দরবনের ২৩৯টি জায়গায় গাছের সঙ্গে ৪৯১টি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল। ২৪৯ দিন ধরে চালু রাখা ক্যামেরাগুলতে বাঘের ২,৫০০টি ছবি পাওয়া যায়। ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা ১১৪টি বাঘ থাকার কথা অনুমান করছেন।

বনবিভাগের কর্মকর্তা আরও বলেন, বাঘশুমারির প্রয়োজনে ওই এলাকাগুলো দিয়ে প্রবাহিত খাল ও নদীগুলোকেও জরিপের আওতায় রাখা হয়েছিল।

আর এই পুরো কাজে বাংলাদেশের বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহায়তা করেছেন ভারতীয় বাঘ বিশেষজ্ঞরা।

এর আগের ২০১৫ সালে বন বিভাগ জরিপ চালিয়ে বলেছিল, বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। একই সংস্থা ২০০৪ সালে বলেছিল, শাবকসহ বাঘের সংখ্যা ৪৪০টি। সেবার প্যাগমার্ক (বাঘের পায়ের ছাপ) পদ্ধতিতে গণনা করা হয়েছিল।

১৯৭৫ সালে বুবার্ট হেনড্রিকস সুন্দরবনে ৩৫০টি বাঘ থাকার তথ্য দিয়েছিলেন। এর পর ১৯৮২ সালে মার্গারেট স্যালটার নমুনা ও সরেজমিন জরিপ চালিয়ে ৪২৫টি বাঘ থকার সম্ভাবনার কথা বলেছিলেন। এর দুই বছর পর রেক্স জিটিন্স সুন্দরবন দক্ষিণ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ১১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় জরিপ চালিয়ে ৪৩০ থেকে ৪৫০টি বাঘ থাকার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন।

সুন্দরবন এলাকায় কাজ করেন এমন লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে ১৯৯২ সালে ৩৫৯টি বাঘ থাকার তথ্য দিয়েছিল বন বিভাগ। পরের বছর সুন্দরবনের ৩৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় প্যাগমার্ক পদ্ধতিতে জরিপ চালয়ে ধন বাহাদুর তামাং ৩৬২টি বাঘের ব্যাপারে তথ্য দিয়েছিলেন।

সুন্দরবন নিয়ে গবেষণাকারীরা সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ার জন্য চোরা শিকারি ও বাঘের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে দায়ী করেছে। সেই সঙ্গে হরিণ শিকারের কারণে খাদ্য সংকটে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে না।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago