ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করা হবে: পাপন
প্রায় ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলল সংবাদ সম্মেলন। তাতে ক্রিকেটের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা হলো খুবই কম। ঘুরেফিরে বারবারই বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনের কণ্ঠে এলো ষড়যন্ত্রের কথা। দেশের ক্রিকেটকে অস্থিতিশীল করতেই ক্রিকেটার দিয়ে আড়ালে কেউ কলকাঠি নাড়ছে বলেই জানালেন বার বার। আর খুব শিগগিরই তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে বলেই জানালেন বিসিবি প্রধান।
আগের দিন মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে সংবাদ সম্মেলন করে ১১ দফা দাবির কথা জানিয়েছিলেন দেশের প্রায় সব তারকা ক্রিকেটার। আর দাবি না মানা পর্যন্ত ক্রিকেটীয় সমস্ত কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। বিসিবি প্রধানের এখানেই আপত্তি। দাবি তাদের কাছে না উপস্থাপন করে সরাসরি খেলোয়াড়দের ক্রিকেট বয়কট করাকে মানতে পারছেন না কিছুতেই। একটি বিশেষ মহল তাদের ব্যবহার করে দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন বলে দাবি করছেন তিনি।
বাইরে থেকে কারা ক্রিকেটারদের এমন পদক্ষেপের পেছনে আছেন, তা জানেন বলে দাবি করেন বিসিবি প্রধান। খুব শিগগিরই তাদের নাম প্রকাশ করবেন বলেই জানিয়েছেন তিনি। এখন খোঁজ চলছে ক্রিকেটারদের মধ্যে কিংবা বিসিবির মধ্যে কারা জড়িত। তাদেরকে খুঁজে বের কঠিন শাস্তি দেবেন বলেই মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে জানালেন পাপন, ‘ধীরে ধীরে সবই বের হবে। আপনারা আস্তে আস্তে সবই জানতে পারবেন। বাইরে থেকে কারা করছে এটা আমরা জানি, তবে ভিতর থেকে বা ক্রিকেটারদের মধ্যে কারা জড়িত তা খুব তাড়াতাড়ি খুঁজে বের করা হবে।’
কেন ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার কিছু কারণও ব্যাখ্যা করেন পাপন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিপক্ষে বড় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এটি শুরু হয়েছে বিসিবির একজন পরিচালক গ্রেফতারের পর। উনি গ্রেফতার হওার পর পুরো ব্যাপারটা নিয়ে বাইরের লোক ষড়যন্ত্র করছে। আইসিসির কাছে অভিযোগ করে জিম্বাবুয়ের মতো আমাদের বোর্ডকে সাসপেন্ড করাতে চেয়েছে। সেটিতে সফল না হয়ে দ্বিতীয় ধাপে ক্রিকেটারদের ব্যবহার করছে। হ্যাঁ, ক্রিকেটাররা মিডিয়ার কাছে ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়ায় আইসিসি, এসিসি থেকে শুরু করে সব জায়গায় আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় ওরা তাই সফল হয়েছে।’
তবে সব খেলোয়াড়ই এ ষড়যন্ত্রে জড়িত আছেন এমনটা ভাবছেন না বিসিবি প্রধান, ‘সব খেলোয়াড় এটি জেনেশুনে করছে, আমার তা মনে হয় না। এক-দুজন তেমন থাকতে পারে। বাকিরা ব্যাপারটা না জেনেই করছে। দলের মধ্যে কেউ যদি থেকে থাকে, যে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে- তাকে আমরা অবশ্যই খুঁজে বের করব। পুরো পরিকল্পনা জানে এক-দুজন। খুব শিগগিরই সব প্রকাশ হবে।’
পাপনের দাবি, তাদের কাছে সরাসরি বললে অবশ্যই সব মেনে নিতেন তিনি, ‘ক্রিকেটাররা যেসব দাবি করেছেন তার বেশিরভাগই হয় পূরণ করা হয়েছে নয়তো পূরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। তারপরও তাদের কোন চাহিদা যদি থাকে, তাহলে তারা আমাদের কোন সুযোগ দিল না কেন? আমাদের তরফ থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হচ্ছে। ফোন করা হচ্ছে, তারা কেটে দেয়। তারা আসলে যোগাযোগ করতে চায় না হয়তো। এটা করে দেশের ক্রিকেটের কী উন্নতি হচ্ছে সেটা তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করতে চাই।’
তবে খেলোয়াড়রা আগেই বলেছেন, এ সকল দাবি-দাওয়া নিয়ে এর আগেও বার বার বোর্ডের কাছে গিয়েছেন তারা। বিশেষ করে প্রিমিয়ার লিগের প্লেয়ার্স ড্রাফট বন্ধের দাবি তাদের দীর্ঘদিনের। বেতন ভাতা, দৈনিক খরচ বৃদ্ধি ও বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্যও গিয়েছেন অনেকবার। কিন্তু বার বারই তাদের আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ হয়নি কিছুই। তাই বাধ্য হয়েই ধর্মঘটে গিয়েছেন তারা।
Comments