শুরুর ছন্দ ধরে রাখতে না পারার আক্ষেপ
দুই ওপেনার পাওয়ার প্লেতে শুরুটা পেয়েছিলেন মনমতো, তিনে নেমে সৌম্য সরকার আর পাঁচে নেমে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও তুলতে পেরেছিলেন ঝড়। কিন্তু থিতু হয়ে সবাই ফেরেন কাজ শেষ না করে। তাতে ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটে বড় সংগ্রহ পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের।
রাজকোটে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। রাজকোটের এই মাঠে দুইশো তাড়া করেও জেতার রেকর্ড আছে ভারতের। কাজেই এই রান নিয়ে ম্যাচ জিততে হলে বাংলাদেশের বোলারদের করতে হবে দারুণ কিছু।
ভারতের দুই স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর আর যুজভেন্দ্র চেহেলই রাশ টেনে রাখেন বাংলাদেশের ইনিংসের। এই দুজনের ৮ ওভারে ৫৩ রান এনে ৩ উইকেট দিয়েছে বাংলাদেশ। পেসার চাহারকেও এদিন পেটানো যায়নি। তার চার ওভার থেকে এসেছে কেবল ২৫ রান।
টস হেরে ব্যাটিং পাওয়ায় খুব একটা আক্ষেপ ছিল না বাংলাদেশ অধিনায়কের। দুই ওপেনারের শুরুও তাকে দিয়ে থাকবে তৃপ্তি। দীপক চাহারকে ফ্লিকে চার মেরে শুরু লিটন দাসের, মোহাম্মদ নাইমের শুরুটা আরও আগ্রাসী। খলিল আহমেদকে টানা তিন চারে শুরু তার। দুই ওপেনারই শুরু করেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে। ৬ষ্ঠ ওভারে লেগ স্পিনার যুজভেন্দ্র চেহেলের বলে ভুল করে বসেছিলেন লিটন। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্টাম্পড হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন ১৪ বলে ১৭ করা লিটন। কিন্তু উইকেটরক্ষক ঋষভ পান্ত বল স্টাম্প পেরুনোর আগেই ধরে ফেলায় বেঁচে যান বাংলাদেশ ওপেনার। পরের বলেই চার মেরে উপভোগ করেন নতুন জীবনও।
পাওয়ার প্লের পুরোটাই কাজে লাগিয়ে তাই বাংলাদেশ ওপেনাররা তুলেন ৫৪। পরের ওভারে আরেকবার ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন লিটন। অধিনায়ক রোহিত শর্মাই সময়মত পৌঁছাতে না পারায় রাখতে পারেননি সে ক্যাচ। দুবার জীবন পেয়েও অবশ্য ইনিংস টানতে পারেননি লিটন। চেহেলের বলে থতমত হয়ে উইকেট থেকে বেরিয়ে রানআউটে কাটা পড়েন ২৯ রান করে।
১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলে ৭৮ রান। ওপেনার নাইম টানা দ্বিতীয় ম্যাচে থিতু হয়েও ফিফটির আগেই ফেরেন। শুরুতে আগ্রাসন দেখালেও ডট বলে নিজের উপরই বাড়িয়েছেন চাপ। সেই চাপ থেকে বেরুতে ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন ৩০ বলে ৩৬ রান করে। একাদশ ওভারে ৮৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তিনে নেমে সৌম্য ছিলেন সাবলীল। শিভম দুভেকে পুলে চার মেরে শুরুর পর ক্রুনাল পান্ডিয়াকে উড়িয়েছেন লং অফের উপর দিয়ে। মাঝের ওভারে তার ব্যাটেই রান বাড়ছিল, আরেক পাশে থাকা মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে আরেকটি জুটি কি এই ম্যাচেও গড়ে উঠবে, এই ভাবনা পোক্ত হওয়ার আগেই এবার মুশফিকের বিদায়। চেহেলকে সুইপ করতে গিয়ে ডিম মিডউইকেটে ক্যাচ যায় ৪ রান করা আগের ম্যাচের হিরোর।
পরের ওভারে এসে চেহেল ফেরান সৌম্যকেও। ১৯ বলে ৩০ রান করে সৌম্য আভাস দিচ্ছিলেন বড় কিছুর। কিন্তু লেগি চেহেলের বলের লাইন-লেন্থ না বুঝেই এগিয়ে এসে পেটাতে গিয়ে ফেরেন এলবিডব্লিও হয়ে।
শুরুর ছন্দ হুট করেই হারিয়ে তখন বিপাকে বাংলাদেশ। শেষের কয়েক ওভার থেকে দরকার ঝড়ো কিছুর। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে মিলে সেই ঝড় তোলার চ্যালেঞ্জ ছিল আফিফ হোসেনের কাঁধে।
তরুণ এই ব্যাটসম্যান করেছেন আশাহত। ৮ বলে ৬ রান করে খলিলের বলে ক্যাচ তুলে দেন কাভারে। খানিক পর অধিনায়ক টানেন ইতি। চাহারকে আপার কাট করতে গিয়ে শর্ট থার্ড ম্যানে দিয়েছেন ক্যাচ।
এরপর মোসাদ্দেক হোসেন আর আমিনুল ইসলাম মিলে কোনরকমে দলকে টেনেটুনে দেড়শো পার করান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৩/৬ (লিটন ১৭, নাইম ৩৬ , সৌম্য ৩০, মুশফিক ৪, মাহমুদউল্লাহ ৩০, আফিফ ৬, মোসাদ্দেক ৭* , আমিনুল ৫* ; চাহার ১/২৫, খলিল ১/৪৪, সুন্দর ১/২৫ , চেহেল ২/২৮, দুভে ০/১২, ক্রুনাল ০/১৭ )
Comments