সিটি নির্বাচন: ভবিষ্যতের নেতা খুঁজে পেয়েছে বিএনপি

তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় পরাজয় সত্ত্বেও ভবিষ্যতের দুই নেতা (তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন) খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির দাবি, সিটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করতে সরকারের উদ্দেশ্যে উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছে বিএনপি।

বিএনপি নেতারা বলেন, ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন আবারও প্রমাণ করেছে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।

তারা বলছেন, নির্বাচনে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) যে একটি ‘ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্র’, সিটি নির্বাচনে তা প্রমাণিত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচনের মাধ্যমে ঢাকা শহরে বিএনপির রাজনৈতিক দুর্বলতা ও সাংগঠনিক শক্তি প্রকাশিত হয়েছে। তাই ঢাকার নেতাকর্মীদের উৎসাহ ও মনোবল বাড়াতে অবশ্যই তদারকির প্রয়োজন রয়েছে।

গতকাল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও নির্বাচনের প্রতি জনগণের আস্থা নেই। এমনকি অনেক আওয়ামী লীগ সমর্থকও ভোটকেন্দ্রে যাননি। যা খুবই উদ্বেগজনক।”

মওদুদ আহমদ জানান, সিটি নির্বাচনে আবারও প্রমাণিত হয়েছে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিকল্প নেই।

বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনে সরকার ও ইসির ভূমিকা নিয়ে আগে থেকেই ধারণা ছিলো বিদেশি কূটনীতিকদের। তাদের কাছে নির্বাচনী অনিয়মের প্রমাণাদি তুলে ধরবে বিএনপি।

সিটি নির্বাচনের প্রচারণার মাঠে ছিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। কিন্তু, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে এবং এর আশেপাশে তাদের উপস্থিতি কম ছিলো। এমনকি, অনেক ভোটকেন্দ্রে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টও ছিলো না।

বিএনপির উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে পরাজিত হয়েছেন।

মওদুদ আহমদের মতো বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও জানান, ইভিএম ব্যবহার করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হয়নি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে কথা বলছি। সর্বশেষ সিটি নির্বাচন প্রমাণ করেছে ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফলাফলে কারসাজি করা সম্ভব।”

বিএনপি নেতারা বলেন, “২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনের মতো বিএনপি এবার ফেব্রুয়ারির এক তারিখের নির্বাচন বর্জন করেনি। কারণ, তারা নির্বাচন বর্জন করার অপবাদ নিতে চায় না।”

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করায় দলটি সংগঠনের ভিতরে ও বাইরে প্রচুর সমালোচনার মুখে পড়েছিলো।

বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, “ঢাকা মহানগরীর নেতারা গত দশ বছরে কোনও বড় প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করতে পারেনি। এমনকি নগরীর অনেক শীর্ষ নেতা শনিবার ভোটকেন্দ্রে যাননি।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “গত এক দশকে ঢাকার অনেক নেতাকর্মী ব্যাপক দমন-পীড়নের মধ্যে ছিলেন। একই সময়ে রাজধানী থেকে বিএনপির সর্বাধিক সংখ্যক নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। তবে, ফেব্রুয়ারির সিটি নির্বাচনের প্রচারের সময় আমরা ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।”

বিএনপি প্রতিটি নির্বাচনের পরে নির্বাচনের ফলাফল এবং দলের সক্ষমতা মূল্যায়ন করে বলে জানান মির্জা ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, তারা অবশ্যই দলের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে সেগুলোর সমাধান করবেন।

আজ সিটি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আলোচনা এবং পরবর্তী পরিকল্পনা ঠিক করতে বৈঠকের কথা রয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির।

 

Comments

The Daily Star  | English
Ishraque Demands Advisers Asif, Mahfuj Alam Resign

Protests continue as Ishraque vows to stay on streets until advisers resign

Protests rolled into this morning as BNP activists and leaders held their ground in front of the mosque, demanding that Ishraque be allowed to take the oath as mayor

2h ago