করোনাভাইরাস: নিরুদ্বেগ বাংলাদেশ ব্যাংক
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি চাপের মধ্যে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, তখন অবাক করা বিষয় হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে কী ব্যবস্থা নেবে তার কোনো পরিকল্পনাই নেয়নি। জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি হারাবে দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও বিপদের মুখে এবং দেশের অর্থনীতিও বড় ক্ষতির মুখে পড়বে। তারপরও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এত নিরুদ্বেগের কারণ কী?
করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভ ১৫ মার্চ সুদের হার প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছে এবং ৭০০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠন করেছে। যুক্তরাজ্যের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এই হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। গত মঙ্গলবার ব্রিটিশ চ্যান্সেলর অর্থনীতির জন্য ৩৫০ মিলিয়ন পাউন্ডের সহায়তা ঘোষণা করেছেন। আর আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী করেছে? কিছুই না!
কেন্দ্রীয় ব্যাংক কেন এটা করছে তার কোনো ব্যাখ্যা নেই। বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোনো ঝুঁকির মধ্যে নেই তা তো নয়। প্রকৃতপক্ষে, বিপুল পরিমাণ নন-পারফর্মিং ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের অবস্থা দুর্বল। এর অর্থ, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে বড় ধাক্কা এই খাতে তারল্য সঙ্কট তৈরি করতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নীতিগত সহায়তার অভাবে।
এখনও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কৌশল না নেওয়া হতাশাজনক। কর্তৃপক্ষ কীভাবে বুঝতে ব্যর্থ হয়, এমন অবস্থায় জনগণের আস্থা জাগাতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার ছিল।
আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করছি, বিশ্বব্যাপী মহামারীতে ক্ষতির মুখে পরতে পারে এমন ব্যাংক ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন অবিলম্বে কাজ শুরু করে। সেই সঙ্গে এই ধরনের অনিশ্চিত ও অপ্রত্যাশিত সময়ে যে ধরনের সংকট দেখা দেয় তা সামলে উঠতে জরুরি পরিকল্পনা নিতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।
Comments