‘কয়েক দফা বন্যায় নিঃস্ব হয়ে গেছি’

সুনামগঞ্জের কয়েক দফায় বন্যায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের খেটে খাওয়া মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে নিজেদের সব সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন তারা।
সুনামগঞ্জে তৃতীয় দফা বন্যায় ভোগান্তিতে স্থানীয়রা। ছবি: স্টার

সুনামগঞ্জের কয়েক দফায় বন্যায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন হাওরপাড়ের খেটে খাওয়া মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে নিজেদের সব সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন তারা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, আজ শুক্রবার পুরাতন সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ জেলা শহরের হাসননগরের বাসিন্দা প্রান্তিক কৃষক সাদ্দাম মিয়া বলেন, ‘প্রথম বন্যায় ঘরের ভেতরে দুই ফুট উচ্চতায় পানি ছিল। বারান্দা থেকে নামতে না নামতেই দ্বিতীয় বন্যার পানি ঘরে প্রবেশ করেছে। এখন তৃতীয় দফা বন্যার পানি ঘরে।’ 

‘পরিবারের সবাইকে নিয়ে পানিবন্দি আছি দিন পার করছি। পানির প্রবল ঢেউয়ে বাড়ির পেছনের মাটির ওয়াল ভেঙে গেছে। নিজের সব সহায়-সম্বল হারিয়ে প্রায় পথে বসে যাচ্ছি। কী করে এই অবস্থা থেকে আবার ঘুরে দাঁড়াবো, বুঝতে পারছি না। নিজেকেই নিজের কাছে অসহায় মনে হয়’, বলেন তিনি।

বন্যায় সুরমা নদীর প্রবল বেগে ভাঙনের কবলে পড়েছে পূর্ব ইব্রাহীমপুর গ্রামের বাসিন্দা গাজী রহমান, ফারুক মিয়া, জগলুল মিয়াসহ আরও অনেকের বাড়িঘর।

ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রতিবার আমাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। বন্যা কয়েক দফায় থাকার কারণে ঘরের বেড়াগুলোতে পচন শুরু হয়েছে। ঘরের অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। গোলার ধান ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। রোদ না থাকায় শুকাতে পারিনি। তাই পচে গেছে।’

‘কী করে আবার এই আসবাবপত্র বানাবো, জানি না। আর বন্যার পরে কী খাবো, কী করব, কোথায় থাকবো, কিছুই বুঝতে পারছি না। বারবার বন্যার কারণে আমাদের মতো গরিব মানুষ আজ অসহায়। জীবনের সবকিছুতে গোলমাল লেগে গেছে। কয়েক দফা বন্যায় নিঃস্ব হয়ে গেছি’, যোগ করেন জাহাঙ্গীর আলম।

গাজী রহমান বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙনের কবলে আছি। এবার একাধিকবার বন্যায় আবারও বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়েছে। আমার পাশের বাড়ির ফারুক মিয়ার ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।’

শুধু এই কয়জনই নন, নদী ভাঙনের কবলে পড়ে হাওরপাড়ের অনেকে মেহনতি মানুষ যেমন ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন, তেমনি নিঃস্বও হচ্ছেন।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা যেন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠতে পারে, সেজন্য সারাজেলায় ৩১২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English

3 quota protest leaders held for their own safety: home minister

Three quota protest organisers have been taken into custody for their own safety, said Home Minister Asaduzzaman Khan

Now