আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় লালমনিরহাট-কুড়িগ্রামের বন্যা দুর্গত কৃষক

বন্যায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। নষ্ট হয়েছে প্রায় ২৫০০ হেক্টর জমির ফসল। এখনো প্রায় বিশ হাজার হেক্টর আবাদি জমি বানের পানির নিচে তলিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তার চর রাজপুরে বন্যা দুর্গত কৃষক পরিবারের এক নারী বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত বাদাম গাছ কাটছেন। ছবি: এস দিলীপ রায়

বন্যায় কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। নষ্ট হয়েছে প্রায় ২৫০০ হেক্টর জমির ফসল। এখনো প্রায় বিশ হাজার হেক্টর আবাদি জমি বানের পানির নিচে তলিয়ে আছে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।  

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা এলাকার কৃষক নজের আলী (৬৪) জানান, এবারের বন্যা এতো দীর্ঘমেয়াদি হবে তিনি ভাবতে পারেননি। তার ছয় বিঘা জমির আমন বীজতলা, বাদাম, চিনা ও তিল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখনো জমিগুলো বন্যার পানির নিচে। কবে বন্যার পানি নামবে আর পানি নামলেও চারার অভাবে আমন লাগাতে পারবেন না বলে হতাশা জানান তিনি।

কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল কাদের (৫৫) বলেন, তার দশ বিঘা আবাদি জমির মধ্যে আট বিঘাই এখনও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। নষ্ট হয়েছে ২৫ শতাংশ জমির বীজতলার সব আমন চারা। আগামী দুই-চারদিনে মধ্যে বানের পানি নেমে গেলে হয়তো কোনভাবে চারা সংগ্রহ করে আমন লাগাতে পারতেন কিন্তু পানি নেমে যাওয়ার কোন আশাই দেখছেন না তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নে তিস্তার চর মধুপুরের বন্যা দুর্গত কৃষক সুবল চন্দ্র বর্মণ (৬৫) বলেন, এবারের বন্যায় তার চার বিঘা জমির সবজি, বাদাম, ভুট্টা ও বীজতলার আমন চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আবাদি জমিগুলো থেকে বানের পানি নেমে গেছে কিন্তু চারা সঙ্কটে থাকায় জমিতে আমন লাগাতে পারছেন না। আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে আমন চারা সংগ্রহের চেষ্টা করছেন বলে তিনি জানান।

এনিয়ে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শামিম আশরাফ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, জেলায় বন্যা দুর্গত এলাকাগুলো থেকে বানের পানি নেমে গেছে এবং কৃষকরা তাদের জমিতে আমন লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন।

তিনি জানান, জেলায় বিপুল পরিমাণ আমনের চারা রয়েছে এবং বন্যা দুর্গত কৃষকরা এসব চারা কিনে আমন চাষ করতে পারবেন। এছাড়াও তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে সরকারি সহায়তার জন্য।

এদিকে, কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, কুড়িগ্রামের কৃষকেরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এখনো বিশ হাজার হেক্টরের বেশি আবাদি জমি বন্যার পানির নিচে তলিয়ে আছে। অনেক ফসলি জমিও রয়েছে। পানি নেমে গেলে তারা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের তালিকা করে সরকারি সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

তিনি বলেন, এখন বন্যা দুর্গত এলাকার কৃষকদের ভাসমান বীজতলা তৈরির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পানি নেমে গেলে কৃষকেরা এসব ভাসমান বীজতলার আমন চারা জমিতে লাগাতে পারবেন এতে কোন জমি অব্যবহৃত থাকবে না বলে তিনি জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago