আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

আজ মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হতে যাচ্ছে।
hilsha
ছবি: সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হতে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে ইতিমধ্যে মৎস্য বিভাগ জেলে পরিবার ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে সভা, সমাবেশ, সচেতনতামূলক কর্মসূচী শেষ করেছে।

মৎস্য বিভাগের মতে উপকূলীয় জেলা সমূহ ও দক্ষিণাঞ্চল মিলে ৩৬টি জেলায় এ নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে প্রথমবারের মতো বরিশাল বিভাগের ছয় জেলাসহ মোট ১৭ জেলায় বরফ উৎপাদন বন্ধ থাকবে। ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞার সময় বরিশাল বিভাগের দুই লাখ ৮২ হাজার ৫০০ জেলে পরিবারের জন্য পাঁচ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল ও সারা দেশের পাঁচ লাখ ২৮ হাজার ৩৪২ জেলে পরিবারের জন্য মোট ১০ হাজার ৫৬৭ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে বলে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের ডেপুটি চীফ মাসুদ আরা মমি।

তিনি বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু হয় ২০১০ সালে। সেই সময়ে ইলিশের উৎপাদন ছিল দুই লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, যা গত ১০ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন। গত ১০ বছরে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০ শতাংশ।’

চাঁদপুরের বাংলাদেশ ফিশারি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ইলিশ গবেষক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি, এ বছর মা ইলিশের প্রজনন হার ৫০ শতাংশের বেশি হবে। গত বছর প্রায় ৪৮ দশমিক ৯২ শতাংশ ডিম নিষিক্ত হতে পেরেছিল। বর্ষার শুরুতে ভারি বৃষ্টিপাত নদীতে ইলিশের আগমনের পক্ষে উপযুক্ত। এ ছাড়া অনুকূল পরিবেশের কারণে প্রচুর জৈব প্ল্যাঙ্কটন নদীতে জন্মেছে। অনুকূল পরিবেশ এবং নদীর পানিতে দূষণ কম হওয়ায় ইলিশ প্রজনন বাড়িয়ে তুলতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্র থেকে নদীতে আসা ইলিশের হার বাড়বে। এবার প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ ইলিশের ডিম ফুটে রেণু বের হবে। একটি মা ইলিশ ১০ লাখ থেকে ১২ লাখ ডিম দেয়। এর পাঁচ শতাংশ রেণু টিকে থাকলেও পরের বছর মাছের উৎপাদন প্রায় ১০ শতাংশ বাড়বে।’

গত ১০ বছর ধরে মা ইলিশ রক্ষার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সাগরে ইলিশ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা গত ২৩ জুলাই শেষ হয়েছে। এ ছাড়াও নদীতে মাছ ধরা, বিক্রয়, সংরক্ষণ ও পরিবহনের ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ইলিশের উৎপাদনকে জোরদার করতে সহায়তা করে।

ইলিশের উৎপাদন গত বছর পাঁচ লাখ ৩৩ হাজার টন ছিল, যা এ বছর সাড়ে পাঁচ লাখ টনেরও বেশি হবে বলে মনে করেন এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘ইলিশের আকার আগের বছরগুলোর তুলনায় বেড়েছে এবং এর উৎপাদন আগামী বছর বরিশাল অঞ্চলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়তে পারে।’

বরিশাল মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি অজিত কুমার দাস মনু বলেন, ‘এ বছর বাজারে সরবরাহ করা ৬০ শতাংশ ইলিশের ওজন ৯০০ গ্রাম থেকে শুরু করে এক কেজি ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় আরও বড় আকারে ইলিশ দেখা যাচ্ছে। এমনকি আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের ইলিশও দেখা গেছে।’

বরিশাল অঞ্চলের ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি ইসরাইল পণ্ডিত বলেন, ‘জেলেরা দেরিতে সরকারি সহায়তা পাওয়ায় তাদের বাধ্য হয়ে নদীতে মাছ ধরতে যেতে হচ্ছে।’

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইলিশ আহরনকারী জেলেদের সহায়তার চাল বরাদ্দের দাবি জানান তিনি।

বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, ‘এবছর ইতিমধ্যে বরিশালে সকল ইউএনওকে ৪৭ হাজার জেলে পরিবারের অনুকূলে মোট ৯৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

53m ago