ইকথায়োসিস: জানুন এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন

ইকথায়োসিস ত্বকের একটি রোগ। এ রোগে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ, ফাটা আঁশের মতো হয়ে থাকে। গ্রীক শব্দ ‘ইকথাইস’ মানে মাছ। যদিও সবক্ষেত্রে আক্রান্ত ত্বক মাছের আঁশের মতো নাও হতে পারে।
Ichthyosis symbolic
ইকথায়োসিস, প্রতীকী ছবি। স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

ইকথায়োসিস ত্বকের একটি রোগ। এ রোগে ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ, ফাটা আঁশের মতো হয়ে থাকে। গ্রীক শব্দ ‘ইকথাইস’ মানে মাছ। যদিও সবক্ষেত্রে আক্রান্ত ত্বক মাছের আঁশের মতো নাও হতে পারে।

প্রায় ২৫ ধরনের ‘ইকথায়োসিস’  থাকলেও, ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ‘ইকথায়ওসিস ভালগারিস’ নামে জন্মগত রোগ হিসেবে এটি প্রকাশ পায়। জন্মের পর প্রথম বছরেই এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। জন্মগত ত্রুটি ছাড়াও পরবর্তীতে অনেকে এ আক্রান্ত হতে পারেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বর্ণের ও সব বয়সীরাই এতে আক্রান্ত হতে পারেন।

সাধারণত প্রতি ৩০০ জনে একজন এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ত্বক ছাড়াও  এ রোগের লক্ষণ চোখেও দেখা দিতে পারে। শীত ও শুষ্ক মৌসুমে এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যায়। ইকথায়োসিস কোনো মারাত্মক জীবনহানিকর জটিল রোগ নয়। সংক্রামক নয় বলে এই রোগ সংস্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায় না।

কিভাবে হয়?

আমাদের ত্বকের কোষগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়ে থাকে। পুরাতন কোষ ঝরে গিয়ে সেখানে নতুন কোষ জায়গা করে নেয়। কোনো কারণে পুরাতন কোষ ঝরে পড়ার প্রক্রিয়ায় সমস্যা হলে কিংবা খুব দ্রুত নতুন কোষ তৈরি হতে থাকলে এ রোগ দেখা দিয়ে থাকে।

লক্ষণ কি?

এই রোগে সামান্য শুষ্কতা থেকে ত্বক ফেটে যাওয়া, ফোস্কা পরার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। সাধারণত আক্রান্ত ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ, আঁশের মতো হয়ে থাকে। প্রায় সমস্ত শরীরের ত্বকে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেয়ে থাকে। আঁশের রঙ সাদা থেকে গাড় বাদামি হতে পারে। চুলকানি অনুভূত হতে পারে।

চিকিৎসা

এ রোগ থেকে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করা যায় না। তবে নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যায়।

* যাদের ক্ষেত্রে লক্ষণ শুধু শুষ্ক ত্বক তারা বিভিন্ন ধরনের ময়েশ্চারাইজারিং লোশান ক্রিম বা গোসলে মেডিকেটেড ওয়েল ব্যবহার করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। গোসলে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষারীয় মেডিকেটেড সাবান ব্যবহার করতে হবে।

* কী ধরনের চিকিৎসা দেওয়া হবে তা সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে।

ত্বকে ব্যবহারের বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি অনেক সময় মুখে খাবার ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকে।

* আক্রাক্ত রোগীকে সচেতন ও রোগটি সম্পর্কে জানানো দেওয়া এই রোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকে।

জটিলতা

* ত্বকের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে বিধায় এ রোগে আক্রান্তদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

* ত্বক ফেটে যাওয়ার কারণে দৈনন্দিন জীবনযাপনে চলাফেরায় অসুবিধা হতে পারে।

* ত্বকে সংক্রমণ বা ইনফেকশন হতে পারে।

* চোখ আক্তান্ত হলে দৃষ্টি সমস্যা হতে পারে।

মনে রাখবেন অন্যান্য জন্মগত জটিল রোগের লক্ষণ  হিসেবে বা একই সঙ্গে এ রোগ দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া সোরাইয়াসিস, একজিমা ইত্যাদি রোগেও একই ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এ রোগে আক্রান্তদের নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা জরুরি, যা রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দৈনন্দিন স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করবে।

ডা. এম আর করিম রেজা, ত্বক সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago