রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে শিরোপাধারী মুম্বাইকে হারিয়ে শুরু বেঙ্গালুরুর
ডানহাতি পেসার হার্শাল প্যাটেল ক্যারিয়াসেরা বোলিংয়ে নিলেন ৫ উইকেট। তাতে আশা জাগিয়েও বড় সংগ্রহ গড়তে পারল না শিরোপাধারী মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। লক্ষ্য তাড়ায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে কক্ষপথে রাখলেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। পরে দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। শেষ করে আসতে না পারলেও তার আগ্রাসী ব্যাটিংই গড়ে দিলো পার্থক্য।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৪তম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে দেখা মিলল রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের। চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে শেষ বলে নির্ধারিত হলো জয়-পরাজয়। মুম্বাইকে ২ উইকেটে হারিয়ে বেঙ্গালুরু পেল আসরে শুভ সূচনা। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫৯ রান তোলেন রোহিত শর্মারা। জবাবে ৮ উইকেটে ১৬০ রান করে জয়ের বন্দরে নোঙর করে বেঙ্গালুরু।
জিততে শেষ ৫ ওভারে হাতে ৫ উইকেট নিয়ে ৫৪ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। ততক্ষণে সাজঘরে ফিরে গেছেন কোহলি-ম্যাক্সওয়েলরা। আর ভিলিয়ার্স ব্যাট করছিলেন ৮ বলে ৪ রানে। এমন পরিস্থিতিতে জ্বলে ওঠার বহু নজির আছে এই দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানের। এদিন আরও একবার নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেন তিনি।
মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রি খ্যাত ভিলিয়ার্স রাহুল চাহার-ট্রেন্ট বোল্টদের ওভারে হাঁকান চার-ছক্কা। ভারতীয় তারকা পেসার জসপ্রিত বুমরাহও তাকে আটকাতে পারেননি। তার করা ১৯তম ওভারে ভিলিয়ার্স মারেন ২ চার। ফলে ৬ বলে ৭ রানের সহজ সমীকরণ পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু।
শেষ ওভারে দেখে মেলে চরম নাটকীয়তার। আইপিএলে অভিষেকে ম্যাচে নজর কাড়েন মুম্বাইয়ের মার্কো ইয়ানসেন। এই বাঁহাতি পেসার করেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তার চতুর্থ ডেলিভারিতে ডাবল নিতে গিয়ে রানআউট হন স্বদেশি ভিলিয়ার্স। ক্রুনাল পান্ডিয়ার দ্রুতগতির থ্রো লুফে নিয়ে চটপট স্টাম্প ভেঙে দেন উইকেটরক্ষক ইশান কিশান। তবে শেষ ২ বলে ২ রানের চাহিদা ঠিকই মিটিয়ে ফেলে বেঙ্গালুরু।
ভিলিয়ার্স ৪৮ রান করেন মাত্র ২৭ বলে। তার বিস্ফোরক ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ২ছক্কা। এছাড়া, ওপেনিংয়ে নেমে কোহলি ২৯ বলে ৩৩ রান করেন। অস্ট্রেলিয়ান ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকে আসে ২৮ বলে ৩৯ রান। মুম্বাইয়ের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন বুমরাহ ও ইয়ানসেন। খরুচে লেগ স্পিনার চাহার উইকেটশূন্য থাকেন ৪৩ রান দিয়ে।
এর আগে টপ-অর্ডার ব্যাটসম্যানদের গড়ে দেওয়া ভিত কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় মুম্বাই। ১২.২ ওভারে তাদের সংগ্রহ পেরিয়ে গিয়েছিল শতরান। কিন্তু পরে হতাশ করেন কাইরন পোলার্ড-হার্দিক পান্ডিয়ারা। শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান তুলতে ৫ উইকেট খোয়ায় দলটি। ওপেনার ক্রিস লিন সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেন ৩৫ বলে। এছাড়া, সূর্যকুমার যাদব ২৩ বলে ৩১ ও কিশান ১৯ বলে ২৮ রান করেন।
২০তম ওভারেই পতন হয় মুম্বাইয়ের ৪ উইকেটের। রানআউট বাদে বাকি ৩টি নেন হার্শাল। পোলার্ড-ক্রুনালকে পরপর আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। সবমিলিয়ে তার শিকার ২৭ রানে ৫ উইকেট। ৯৭ টি-টোয়েন্টির ক্যারিয়ারে এটাই তার প্রথম ফাইফার। তাতে রেকর্ডের পাতায়ও ঠাঁই নেন তিনি। আইপিএলে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে প্রথম বোলার হিসেবে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন হার্শাল।
Comments