ঘূর্ণিঝড় ইয়াস

ভোলার সংরক্ষিত বন থেকে হরিণ ভেসে যাওয়ার দাবি স্থানীয়দের

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত ভোলার বিচ্ছিন্ন চর ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বেশ কিছু হরিণ ভেসে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গত ৩১ মে চর নিজামের লোকালয়ে দুটি হরিণ ভেসে আসে। পরে তা উদ্ধার করে আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত ভোলার বিচ্ছিন্ন চর ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে বেশ কিছু হরিণ ভেসে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

ভারতের উপকূলে গত ২৬ মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। এই ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের কয়েকটি জেলার উপকূলীয় এলাকায়।

ভোলার বন বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুসারে, জেলার কয়েকটি চরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিমাণ ৯৪ হাজার একর। বানর, ভোঁদড়, খরগোশ ও সাপসহ এসব বনে থাকা হরিণের সংখ্যা সাত-আট হাজারের মতো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বনগুলো সাত থেকে আট ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় ২৬ মে চরফ্যাশন উপজেলার স্লুইসগেট এলাকায় একটি হরিণ ভেসে আসে। পরে একই উপজেলার নজরুলনগর ইউনিয়ন থেকে জবাই করা একটি হরিণ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এ ছাড়া ৩১ মে চর নিজামের লোকালয়ে দুটি হরিণ ভেসে আসলে তা উদ্ধার করে আবার বনে ছেড়ে দেওয়া হয়।

চর নিজামের সংরক্ষিত বনের বিট কর্মকর্তা আমির হামজা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, এই বনে অন্তত ত্রিশটি হরিণের বসবাস। ইয়াসের প্রভাবে বনে যে পরিমাণ পানি উঠেছিল তাতে কিছু হরিণ ভেসে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন, জোয়ারের পানিতে আটকে কেবলমাত্র ঢাল চরেই ২০০ গরু-মহিষ মারা গেছে।

চরফ্যাশন উপজেলার  ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম হাওলাদার জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময় এই ইউনিয়নটিও আট ফুট পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছিল।

একই উপজেলার কুকরী মুকরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাশেম মহাজন বলেন, ‘এখানকার বনটির আয়তন ছয় হাজার ৭০০ একর। ইয়াসের প্রভাবে এখানে যে পরিমাণ পানি বেড়েছিল, তাতে মনে হয় হরিণসহ অনেক বন্যপ্রাণী ভেসে গেছে।’

মনপুরা উপজেলার বাসিন্দা আবদুর রাকিব বলেন, ‘প্রতিবার জলোচ্ছ্বাস কিংবা ঘূর্ণিঝড়ের পর লোকালয়ে হরিণ ভেসে আসার ঘটনা ঘটে। এবারও ঘটেছে।’

এদিকে ভোলার বন কর্মকর্তা  মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম জানান, হরিণসহ বন্যপ্রাণী ভেসে যাওয়ার কোনো খবর তাদের কাছে নেই।

দ্য ডেইল স্টারকে তিনি বলেন, ‘হরিণ খুব সচেতন প্রাণী। বিপদ দেখলে তারা ঠিকই আশ্রয় খুঁজে নিতে পারে।’

এ ছাড়া ইয়াসের কারণে এই এলাকার বনাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য মাঠ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল ভোলা বন বিভাগ।

ওই কমিটির প্রধান সহকারী বন সংরক্ষক দেবদাস মুখার্জীও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পর তদন্ত কমিটির সদস্যরা অন্তত সাতটি বন পরিদর্শন করেছেন। তাতে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি দেখতে পাননি তারা। কেবল নতুন সৃজিত বনগুলোর ৪০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Upazila Polls: AL, BNP struggle to keep a grip on grassroots

The upazila election has exposed how neither of the two major parties, the Awami League and BNP, has full control over the grassroots leaders.

7h ago