জীবনের বিকাশে ও জীবন ধারণের প্রয়োজনে মহাসমুদ্র

জীবনের বিকাশে ও জীবন ধারণের প্রয়োজনে সমুদ্রের অবদান তুলে ধরার প্রয়োজনে এ বছর পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মহাসাগর দিবস-২০২১। বিশ্বের অনেক দেশ ১৯৯২ সাল থেকে দিবসটি পালন করলেও ২০০৯ সাল থেকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ জুন এ দিবস পালিত হচ্ছে।

জীবনের বিকাশে ও জীবন ধারণের প্রয়োজনে সমুদ্রের অবদান তুলে ধরার প্রয়োজনে এ বছর পালিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মহাসাগর দিবস-২০২১। বিশ্বের অনেক দেশ ১৯৯২ সাল থেকে দিবসটি পালন করলেও ২০০৯ সাল থেকে জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ জুন এ দিবস পালিত হচ্ছে।

মানুষের বসবাসযোগ্য এই গ্রহের তিন ভাগ জল ও একভাগ স্থল। এ গ্রহের প্রায় ১০০ কোটি মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণ হয় মহাসাগর থেকে। শুধু তা নয়, সুনীল অর্থনীতির মূল উৎস মহাসমুদ্র। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্রভিত্তিক শিল্পে বিশ্বের প্রায় চার কোটি মানুষ সংযুক্ত থাকবে। বিশ্বের বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ সম্পাদিত হয় সমুদ্র পথে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় সুনীল অর্থনীতিতে সমুদ্রের ভূমিকা।

বিশাল জলরাশি দিয়ে ঘেরা উপকূলীয় অঞ্চলের নানাবিধ উদ্ভিদ ও প্রাণীর উপর মানুষের সমূহ নির্ভরশীলতা আছে। যে উপকূলীয় অঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষায় মানুষের সহযোগী হতে পারত কিন্তু বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড উপকূলীয় অঞ্চলকে করে তুলছে বিপন্ন। শুধু তা নয়, অসচেতন কর্মকাণ্ডে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রবাল প্রাচীর ধ্বংসের মুখোমুখি। মাছের বিভিন্ন প্রজাতি বিপন্ন ও বিলুপ্ত।

মানুষের বেঁচে থাকা ও জীবপন ধারণের অতি আবশ্য মৌলিক চাহিদার অন্যতম খাদ্য, ঔষধের জন্য আমাদের নির্ভরশীলতা রয়েছে সমুদ্রের প্রতি। তাছাড়া সভ্যতার উৎকর্ষ সাধনের জন্য যে জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ ব্যবহার হচ্ছে সেগুলোরও অন্যতম উৎস মহাসাগর। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশের বসবাস। আর, বঙ্গোপসাগরের উপর নির্ভরশীল পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় তিন কোটি মানুষ।

এমনকি বায়ুমণ্ডল, যেখান থেকে প্রতি শ্বাসে-প্রশ্বাসে শক্তি যোগান দিয়ে ফুসফুসকে সচল ও দেহকে কর্মক্ষম রাখছি সে বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে এ মহাসাগরগুলো। পৃথিবীর প্রাণিজগতের বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের প্রায় ৫০ ভাগ আসে মহাসমুদ্র থেকে।

মানুষের অন্যায্য আচরণ শুধু উপকূলীয় অঞ্চলকে নয় মহাসমুদ্রের জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলছে। ফল হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানুষ। কিন্তু মানুষের লোভ, সভ্যতার নামে অনায্য আগ্রাসন থেকে এই গ্রহকে রক্ষা ও প্রজন্ম পরম্পরায় এটিকে সুস্থ রাখা প্রত্যেকের সুদীপ্ত অঙ্গীকার হওয়া উচিত।

সাগর এবং সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং এদের টেকসই ব্যবহারের লক্ষ্যে জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে সমুদ্র দশক। আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত ঘোষিত সমুদ্র দশকে শিক্ষা, সমুদ্র পর্যবেক্ষণ সিস্টেমে, গবেষণা ও সুনীল অর্থনীতিতে বিশ্বমানে পৌঁছাতে আমাদের সমন্বিত প্রস্তুতি আছে কি?

ড. মোহন কুমার দাশ: নির্বাহী পরিচালক, ন্যাশনাল ওশানোগ্রাফিক এন্ড মেরিটাইম ইনস্টিটিউট (নোয়ামি)

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

13h ago