বরিশাল মেডিকেলে রোগীর স্বজনদের অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত, কৃত্রিম সংকট

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের একাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করায় সেখানে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে সামান্যই।
বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগীর স্বজনদের অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছবি: টিটু দাস/স্টার

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্বজনদের একাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার মজুত করায় সেখানে কৃত্রিম সংকট তৈরি হচ্ছে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে সামান্যই।

আজ শুক্রবার হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী থেকে একজন করোনা রোগী তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন হাসপাতালের স্টোরে অক্সিজেন না থাকায়, অন্য এক রোগীর সংগ্রহে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে ওই রোগীকে দেওয়া হয়।’

‘প্রতিদিনই এখানে সিলিন্ডার নিয়ে যুদ্ধ চলে। যার যেমন ক্ষমতা, তার স্বজনরা তেমন করে অক্সিজেনের সিলিন্ডার নিয়ে বেডের পাশে মজুত করে রাখে,’ বলেন ওই ওয়ার্ড বয়।

বরিশাল মেডিকেলে ভর্তি হওয়া এক রোগীর স্বজন ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শুনেছি প্রয়োজনের সময় এখানে অক্সিজেন পাওয়া যায় না। সে কারণে রোগীকে বাঁচানোর জন্য আগে থেকেই অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে রেখেছি।’

অন্য এক রোগী জানান, জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য তিনি বাড়ি থেকে দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এসেছেন।

একজন নার্স ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিদিন দুইশ থেকে তিনশ রোগী থাকেন। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গে থাকেন তিন-চার জন করে স্বজন। আমাদের পক্ষে রোগীর স্বজনদের বাঁধা দেওয়া সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।’

হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড বয় বলেন, ‘গত বুধবার একটি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি অধিকাংশ রোগী দুই থেকে চারটা পর্যন্ত সিলিন্ডার মজুত করে রেখেছেন। অনেকে আবার বেডের নিচেও সিলিন্ডার লুকিয়ে রাখেন।’

হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটের দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এমনও হয়েছে, অক্সিজেন পুরোপুরি ব্যবহার না করে আরেকটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিজেরাই লাগাচ্ছে। এর ফলে অক্সিজেনের অপচয় হচ্ছে।’

সবার অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অন্তত অর্ধেক রোগীরও যদি প্রয়োজন হয়, সে রকম অক্সিজেনের ঘাটতি নেই। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থেকে ৮২ জনকে অক্সিজেন দেওয়া যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট থেকে নয় হাজার লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, আমাদের আরও ৩০০টি ১২ লিটারের সিলিন্ডার রয়েছে। যা দিয়ে বর্তমান রোগীর চাপ মোকাবিলা করা সম্ভব।’

শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা ইউনিটে বর্তমানে আড়াইশর মতো রোগী আছেন। তাদের অক্সিজেন দেওয়ার সক্ষমতা আছে। অক্সিজেনের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু রোগীর সংখ্যা যদি দুই-তিন গুণ হয় তাহলে সংকট সৃষ্টি হবে। এজন্য ১১ হাজার লিটারের আরও একটি প্লান্ট বসানো হয়েছে। তবে, এটি এখনো চালু করা যায়নি। এটা চালু করা গেলে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।’

বরিশালের জেলা প্রশাসক মো. জসিমউদ্দিন বলেন, ‘কোনোভাবেই একাধিক অক্সিজেন সিলিন্ডার রাখতে দেওয়া যাবে না।’

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কোভিড সংক্রান্ত কমিটিকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ২৪৪ জন। তাদের মধ্যে মারা গেছেন সাত জন। হাসপাতালের মোট কোভিড শয্যা সংখ্যা ৩০০ করা হয়েছে। এ ছাড়া আইসিইউ আছে ২২টি।

Comments

The Daily Star  | English

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.63 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.63 crore, which is 1,619 times the contract value.

4h ago