শাহজাদপুরে যমুনার ভাঙনে শতাধিক বাড়িঘর বিলীন

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাঁচিল শরিফ মোড় গ্রামের নদীপারের বাসিন্দা কোহিনূর বেগমের কান্না যেন থামছে না। এক সপ্তাহ আগেও যে বাড়িতে ছিল তার সাজানো সংসার সেই বাড়িটি তার চোখের সামনেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাঁচিল শরিফ মোড় গ্রামে যমুনার ভাঙন। ১৮ জুলাই ২০২১। ছবি: স্টার

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাঁচিল শরিফ মোড় গ্রামের নদীপারের বাসিন্দা কোহিনূর বেগমের কান্না যেন থামছে না। এক সপ্তাহ আগেও যে বাড়িতে ছিল তার সাজানো সংসার সেই বাড়িটি তার চোখের সামনেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বাড়ির সঙ্গে ভেসে গেছে সংসারের প্রায় সব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও। কয়েক মুহূর্তে সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরা কোহিনুর বেগমের কান্না থামাতে পারছেন না কেউ।

মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কোহিনূরের মতো একই অবস্থা সেই এলাকার অর্ধ শতাধিক মানুষের। গত বুধবার সেখানে ২০টি বাড়ি ও একটি মসজিদ চোখের সামনে হারিয়ে যেতে দেখেছেন তারা। ভাঙন এখনো অব্যাহত রয়েছে।

স্থানীয়রা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, যমুনার পানি কমতে থাকায় শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে।

মাস খানেক আগে ভাঙন-রোধে এ গ্রামে বালুভর্তি জিওটেক্স বস্তার ডাম্পিং করা হয়েছিল। যমুনার এ অংশে ব্যাপক ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হওয়ায় ওই গ্রামের ১০০ মিটার এলাকার বালুভর্তি জিওটেক্স বস্তা ধসে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে। হঠাৎ ভাঙন শুরু হওয়ায় সেখানকার লোকজন তাদের বাড়িঘর, আসবাবপত্র সরিয়ে নেওয়ারও সময় পায়নি।

চোখের সামনে সবকিছু যমুনায় বিলীন হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর বাস করছেন। অনাহারে-অর্ধাহারে থেকে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

পাঁচিল শরিফ মোড় এলাকার আব্দুস সাত্তার ডেইলি স্টারকে জানান, ‘বুধবার দুপুরের পর থেকে মাটিতে ফাটল দেখা যায়। আমরা বাড়ি-ঘর সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছি আকস্মিকভাবে সন্ধ্যার আগে থেকে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের তীব্রতায় আমরা কিছুই বাঁচাতে পারিনি। আমাদের চোখের সামনেই বাড়ি-ঘর সব তলিয়ে গেছে। মুহূর্তের মধ্যে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ মো. শামসুজ্জোহা ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শাহজাদপুরের কয়েকটি এলাকায় যমুনার ভাঙন তীব্র হচ্ছে। গত কয়েকদিনে শতাধিক বাড়ি-ঘর নদীতে বিলীন হয়েছে।’

‘তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে’ বলে যোগ করেন তিনি।

তিনি জানান, পরবর্তীতে ঘর তৈরির জন্যও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে বলে। ভাঙন রোধে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কাজ করতে বলা হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘শাহজাদপুরে ভাঙন রোধে বালুভর্তি জিওটেক্স বস্তা ডাম্পিং কাজ অব্যাহত আছে। সেখানে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে কাজ করতে হবে। তবে এখনই সেই কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Love road at Mirpur: A youthful street

Certain neighbourhoods in Dhaka have that one spot where people gather to just sit back and relax. For Mirpur, it’s the frequently discussed street referred to as “Love Road”.

4h ago