ঢাকার সরকারি হাসপাতালে যুক্ত হচ্ছে ১২০০ কোভিড শয্যা

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মুখে সরকার ঢাকার ছয়টি সরকারি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও এক হাজার ২০০ কোভিড শয্যা যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মুখে সরকার ঢাকার ছয়টি সরকারি হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও এক হাজার ২০০ কোভিড শয্যা যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।

এ বিষয় গত ১৮ জুলাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় আমরা দ্রুত করোনা রোগীদের জন্য শয্যা বাড়ানো নির্দেশ দিয়েছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই কাজটি সম্পন্ন হবে।'

মন্ত্রী জানান, কোভিড রোগীর সংখ্যা অব্যাহতভাবে বাড়ার কারণে হাসপাতালের খালি শয্যাগুলো দ্রুত কমে আসায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত এক মাস ধরে কোভিডে আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাজধানীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যার সংখ্যা পাঁচ হাজার ৭১৭টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত মাত্র দুই হাজার ৭০টি শয্যা খালি ছিল।

এর বাইরে ৮৭৮টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে খালি ছিল মাত্র ১৪৭টি।

সভায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০০, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ৩০০, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০০ এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০০টি করে শয্যা যুক্ত করা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এই ছয়টি সরকারি হাসপাতালের মধ্যে কোভিড রোগীদের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ২৬৩টি ও নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ৬০টি সাধারণ শয্যা আছে।

এর বাইরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (বিএসএমএমইউ) কনভেনশন সেন্টারটিকে কোভিড রোগীদের জন্য এক হাজার শয্যার ফিল্ড হাসপাতালে রূপান্তর করা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ ব্যাপারে বলেন, 'এখানে (বিএসএমএমইউ) ৪০০টি আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) ও এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) শয্যা থাকবে।'

এ ছাড়া রোববার সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, রাজধানীর হাসপাতালগুলোর সেবা কার্যক্রম দেখভালের জন্য একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিমও গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমাদের সম্পদ সীমিত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে এই বাড়তি শয্যাও যথেষ্ট হবে না।'

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাড়তি শয্যার সঙ্গে প্রয়োজনীয় লোকবল না বাড়ালে তা কোনো কাজে আসবে না।

গত ১৯ জুলাই নিটোর পরিচালক আব্দুল গনি মোল্লা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা এর মধ্যে শয্যা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছি। হাসপাতালের ৮ থেকে ১২ তলা পর্যন্ত কোভিড ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে। হাসপাতালে আরও ২০০ কোভিড শয্যা যুক্ত করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। কিন্তু আমাদের এখানে কোনো আইসিইউ সুবিধা নেই।'

নিটোর পরিচালক এটাও জানান যে, তাদের লোকবলের ঘাটতি আছে। কারণ পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কোভিড চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত না। তিনি বলেন, 'কিন্তু আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিতে চেষ্টা করব। কারণ এখন একটা সঙ্কট চলছে।'

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক খলিলুর রহমান জানান, আরও ৩৫০টি শয্যা বাড়ানোর সক্ষমতা তাদের আছে। লোকবলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অতিরিক্ত লোকবলের জন্য তারা এর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) শেখ ফরিদ হোসেনের বক্তব্য, রাতারাতি স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না। তিনি বলেন, 'চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্ট নিয়োগের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। এখন বিদ্যমান লোকবল দিয়েই সেবা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে।'

পাশাপাশি কোভিড রোগীদের জন্য আইসিইউ শয্যার সংখ্যাও বাড়ানো হবে বলে জানান ফরিদ হোসেন।

বর্তমানে সারাদেশে কোভিড রোগীদের জন্য রাখা মোট সাধারণ শয্যার সংখ্যা ১৫ হাজার ৬২৫টি। অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে গতকাল ছয় হাজার ১৯৮টি শয্যা খালি ছিল।

এ ছাড়া সারাদেশের এক হাজার ৩০১টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত খালি ছিল মাত্র ২৫৭টি।

 

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

1d ago