ঈদের আগে-পরে ১১ দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২০৭
ঈদুল আজহার আগে-পরে ১১ দিনে (১৪-২৪ জুলাই) দেশে ১৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০৭ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও ৩৮৯ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণ গেছে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীর।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে আজ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংগঠনটি তার প্রতিবেদনে বলেছে, এসময়ের মধ্যে ৭৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন মোট ৮৭ জন, যা মোট নিহতের ৪২ দশমিক ০২ শতাংশ। দুর্ঘটনায় পথচারী নিহত হয়েছে ৪৩ জন, যা মোট নিহতের ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৩২ জন, অর্থাৎ ১৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এই সময়ে চারটি নৌ-দুর্ঘটনায় দুই জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছে। দুইটি রেল দুর্ঘটনায় দুই জন নিহত হয়েছে।
এলাকার ভিত্তিতে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এই বিভাগে ৩৩টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪৮ জন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ছিল সিলেট বিভাগে। সেখানে চারটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে চার জন। একক জেলা হিসেবে রংপুরে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এখানে পাঁচটি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত হয়েছে। সুনামগঞ্জে সবচেয়ে কম একটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কেউ হতাহত হয়নি।
দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ৮৭ জন (৪২ দশমিক ০২ শতাংশ), বাস যাত্রী ১২ জন (৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ যাত্রী আট জন (৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ১৩ জন (৬ দশমিক ২৮ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-লেগুনা) ৩১ জন (১৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ), নসিমন-মাহিন্দ্র-চান্দেরগাড়ি যাত্রী ১০ জন (৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ), বাইসাইকেল আরোহী ৩ জন (১ দশমিক ৪৪ শতাংশ) নিহত হয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনার জন্য রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মূল যেসব কারণ চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে আছে—ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি; গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
২০২০ সালের ঈদুল আযহার আগে-পরে ১৪ দিনে ১৮৭টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন নিহত হয়েছিল। গড়ে প্রতিদিন নিহত হয়েছিল ১৬ জনের বেশি। এবারের ঈদুল আযহার আগে-পরে ১১ দিনে নিহত হয়েছে ২০৭ জন। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছে ১৮ জনের বেশি। এই হিসাবে প্রাণহানি বেড়েছে ১৫ দশমিক ০৪ শতাংশ।
Comments