মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে সন্তানের আকুতি

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগী মিউকরমাইকোসিসে (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস) আক্রান্ত বলে শনাক্ত করেছেন চিকিৎসকরা। স্থানীয় বাজারে মিউকরমাইকোসিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ সংকট দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীর স্বজন।
Black Fungus.jpg
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগী মিউকরমাইকোসিসে (ব্ল্যাক ফাঙ্গাস) আক্রান্ত বলে শনাক্ত করেছেন চিকিৎসকরা। স্থানীয় বাজারে মিউকরমাইকোসিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ সংকট দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন রোগীর স্বজন।

তারা জানান, গত তিন দিন ধরে খুঁজেও চট্টগ্রাম ও ঢাকায় অ্যান্টি ফাঙ্গাল ওষুধ 'লিপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি' পাওয়া যায়নি।

জুন মাসের মাঝামাঝিতে পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা ফেরদৌসি বেগমের (৬০) করোনা শনাক্ত হয়। প্রথমে তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে স্টেরয়েড দেন চিকিৎসকরা।

ফেরদৌসি বেগমের মেয়ে তাহমিনা বেগম বলেন, '১৩ জুলাই মায়ের করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ আসে। ১৫ জুলাই হঠাৎ তিনি দাঁতে ব্যথা অনুভব করেন। শুরুতে আমরা মনে করেছিলাম এটা ডেন্টাল প্রবলেম। একজন ডেন্টিস্টের কাছেও নেওয়া হয়েছিল। পরীক্ষা রিপোর্ট দেখে তিনি সন্দেহ করেন, মা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। এর পরে আমরা মাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। বায়োপসি রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন মা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত। এরপর লিপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দেন। চট্টগ্রামে না পেয়ে আমরা ঢাকায় খোঁজ করেছিলাম কিন্তু কোথাও এই ওষুধ পাওয়া যায়নি। বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস এই ওষুধ উৎপাদন করে। আমরা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার পরে তারাও জানিয়েছে, এই ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। তাদের কাছে মজুদ নেই।'

তাহমিনা আরও বলেন, 'চিকিৎসক জানিয়েছেন, মায়ের চিকিৎসায় এই ওষুধ অত্যাবশ্যকীয়। আমরা এখন এই ওষুধ কোথায় পাব? আমরা গণমাধ্যমের কাছে অনুরোধ জানাই, আমার মায়ের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করুন।'

বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস চট্টগ্রাম দক্ষিণের এরিয়া ম্যানেজার শামীম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, লিপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি ওষুধটি আমরা উৎপাদন করলেও এই মুহূর্তে বাজারে নেই। অন্য কোনো কোম্পানি এই ওষুধ তৈরি করে কি না তা আমি জানি না।

তাহমিনা বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন— বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানি এই ওষুধ উৎপাদন করে না।

চমেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের মুখপাত্র ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুযত পাল ডেইলি স্টারকে বলেন, আমরা সন্দেহ করছি ওই নারী মিউকরমাইকোসিস রোগে আক্রান্ত, তাকে লিপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাজারে এই ওষুধের সংকটের কথা জানানো হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

তাহমিনা আরও বলেন, ৫০ মিলিলিটার ইনজেকশানের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৫ হাজার টাকা। আমার মাকে ২৫০ মিলিলিটার করে সাত দিন লিপোসোমাল অ্যামফোটেরিসিন বি দিতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৭৫ হাজার টাকার ইনজেকশান দিতে হবে। তার জন্য আমরা প্রস্তুত কিন্তু ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না।

Comments

The Daily Star  | English
digital security act

Press freedom index: Bangladesh falls 2 spots, only Afghanistan worse in South Asia

The country was ranked 165th among 180 nations, placing it only above Afghanistan among South Asian countries

1h ago