কাল থেকে ঢাকায়, ৭ আগস্ট সারা দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান

আগামীকাল থেকে ঢাকায় এবং আগামী ৭ আগস্ট সারা দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শামসুল হক।
Oxford vaccine
ছবি: সংগৃহীত

আগামীকাল থেকে ঢাকায় এবং আগামী ৭ আগস্ট সারা দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শামসুল হক।

আজ রোববার দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অংশ নিতে তিনি এ কথা বলেন।

shamsul_hoque_1aug21.jpg
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. শামসুল হক। ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি আমরা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করেছিলাম। ১৫ লাখ ২১ হাজার ৯৪৭ জন দ্বিতীয় ডোজ থেকে বাদ পড়েছিলেন। আমরা আশ্বস্ত করতে চাই, জাপান সরকারের পক্ষ থেকে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আমরা ১০ লাখ ২৬ হাজার ৩২০ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন হাতে পেয়েছি। আরও ছয় লাখ ডোজ আগামী ৩ আগস্ট আমাদের হাতে এসে পৌঁছাবে। প্রথমে যে দুই লাখ ৪৫ হাজার ভ্যাকসিন আমাদের কাছে এসেছিল তা ঢাকা শহর এবং ঢাকার সব জেলায় বিতরণ করেছি। আশা করি আগামীকাল থেকে ঢাকার সব জেলা ও শহরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার দ্বিতীয় ডোজ যাদের বাদ পড়েছিল তাদের দিতে পারবো। আগামী ৭ আগস্ট থেকে আমরা সারা দেশে পূর্বের কেন্দ্রগুলোতে দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারবো। যারা প্রথম ডোজের ভ্যাকসিন যে কেন্দ্র থেকে নিয়েছিলেন, সেই কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

মো. শামসুল হক বলেন, যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। দ্বিতীয় ডোজের জন্য এসএমএস পেয়েছেন কিন্তু নেননি বা নিতে পারেননি তাদের দ্বিতীয় ডোজ এখান থেকে দেওয়া হবে। তার জন্য নতুন এসএমএস লাগবে না, পূর্বের এসএমএস দেখালেই হবে। আগামী ৭ থেকে ১২ আগস্ট ইউনিয়ন পর্যায়ে, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন এলাকা জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি চলবে। যারা যে এলাকায় রেজিস্ট্রেশন করবেন সেই এলাকায় ভ্যাকসিন নেবেন। অন্য এলাকা থেকে ভ্যাকসিন নিলে তার তথ্য সঠিকভাবে পাওয়া যাবে না। সনদ পেতে বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন।

maksudul_alam1_1aug21.jpg
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এবিএম মাকসুদুল আলম

আইসিইউ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই

আইসিইউ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে আশ্বস্ত করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এবিএম মাকসুদুল আলম। ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি অতিমারির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। এই অতিমারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। হাসপাতালের সক্ষমতা বেড়েছিল শয্যা সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু আমরা যদি সংক্রমণ কমাতে না পারি, এই সক্ষমতা আমাদের কাজে লাগবে না।

করোনা চিকিৎসার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভাগ হাসপাতালে ভর্তি হয়। জটিল অবস্থায় অনেকের অক্সিজেন দরকার হয়। অক্সিজেন এক ধরনের ওষুধ, এটি অপ্রয়োজনীয় বা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করলে ক্ষতি হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আজ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৫৯৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০৮ জনের এইচডিইউ ও আইসিইউ সাপোর্ট লেগেছে। আইসিইউ আসলে রোগীর ডেথ বেড, আইসিইউতে গেলে রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আমরা সাধারণত এগুলো অ্যাভোয়েড করি। যারা মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে যায় তাদের আউটকাম খুবই কম। আমাদের যত রোগী সংক্রমিত হয় তাদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হয় না। হাসপাতলে ভর্তির প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শে কারো কারো অক্সিজেন দরকার হয়। তাদের এক শতাংশের আইসিইউ দরকার হয়। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নাই। আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। প্রয়োজন হলে তারা অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবেন। অনেকেই ভয় পান, সাধারণ চিকিৎসায় এই রোগ ভালো হয়।

আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানি, সংক্রমণ কমাতে না পারি, হাসপাতালে যেভাবে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে শয্যা বাড়িয়ে কিংবা চিকিৎসা সরঞ্জাম বাড়িয়ে সংকুলান করা যাবে না। নিয়ম মেনে না চললে আমাদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাবে বলেন মাকসুদুল আলম।

গত দুই দিন ধরে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বিভিন্ন কারখানার কর্মীরা ঢাকায় ফিরছেন সে প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা বরাবরই বলেছি জনসমাবেশ উপেক্ষা করে চলতে। কারণ এগুলো সংক্রমণ বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে। গণমাধ্যমে দেখিয়েছে, আমরা সবাই দেখেছি— সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।

আরেক প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলো আমরা জানি, নতুন কোনো উপায় নেই। লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো বা কমানো এটি নির্ভর করবে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে নীতি-নির্ধারণী মহলে যারা কাজ করেন তাদের ওপর। আমরা বিশ্বাস রাখতে চাই জনস্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ভবঘুরেদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা পর্যন্ত সবাইকে টিকা দিতে চাই। ন্যূনতম পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে টিকা নেওয়া যাবে। যারা ভবঘুরে, তাদের কেউ বুঝিয়ে যদি কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে তারাও টিকা নিতে পারবেন।

Comments

The Daily Star  | English
Economic crisis to deepen in 2026: Debapriya

Economic crisis to deepen in 2026: Debapriya

The economist says at the first Moazzem Hossain Commemorative Lecture on macroeconomic challenges and way forward

26m ago