অবিক্রিত গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পাবনা-সিরাজগঞ্জের খামারিরা

অবিক্রিত গরু পালন করা দুশ্চিন্তায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জের খামারিরা। তারা জানান, গরু পালন ব্যয়বহুল হওয়ায় আগামী ঈদ পর্যন্ত সেগুলো পালন নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন।
পাবনার সুজানগর উপজেলার চৈত্রহাটি গ্রামের একটি খামারের অবিক্রিত গরু। ১ আগস্ট ২০২১। ছবি: আহমেদ হুমায়ুন কবির তপু/ স্টার

অবিক্রিত গরু পালন করা দুশ্চিন্তায় পাবনা ও সিরাজগঞ্জের খামারিরা। তারা জানান, গরু পালন ব্যয়বহুল হওয়ায় আগামী ঈদ পর্যন্ত সেগুলো পালন নিয়ে তারা বিপাকে পড়েছেন।

পাবনার সুজানগর উপজেলার চৈত্রহাটি গ্রামের খামারি আব্দুল্লাহ আল মামুন এ বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ৩২টি গরু পালন করেছিলেন। এর মধ্যে পাঁচটি ছিল বড় জাতের গরু।

তিনি খামারের সবচেয়ে বড় গরুর নাম দিয়েছিলেন 'পাবনার বস', এর ওজন প্রায় ৪০ মন। এর চেয়ে ছোট গরুটির ওজন প্রায় ৩০ মন। এর নাম দেওয়া হয়েছিল 'পাবনার রাজা'।

কোরবানির ঈদের এক সপ্তাহ আগে ৩২টি গরু নিয়ে মামুন ঢাকার উত্তরার গরুর হাটে যান। আশা ছিল, সব গরু বিক্রি করে আট থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ করবেন। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বড় পাঁচটি গরুর দামই জানতে চাননি কোনো ক্রেতা।

কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় গরুগুলো বিক্রি করতে পারেনি মামুন। তিনি মাঝারি সাইজের ২৭টি গরু বিক্রি করেন। প্রায় পাঁচ লাখ টাকা লোকসান হলেও বড় গরুগুলো খামারে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন।

ঈদ উৎসবে লাভের আশায় পালন করা এই গরুগুলো নিয়ে এখন বিপাকে রয়েছেন মামুন।

তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বড় সাইজের এই পাঁচটি গরু পালন করতে প্রতি মাসে লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। প্রায় দুই বছর ধরে এই পাঁচটি গরু পালনে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা। আশা ছিল, ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করা যাবে এই গরুগুলো।'

'এ বছর ঢাকার হাটে গরু নিয়ে যাওয়ার পর আমার খামারের সবচেয়ে বড় গরুটির দামই বলেননি কোনো ক্রেতা। অন্যগুলো তিন লাখ টাকার ওপর দাম বলেননি কেউ। কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে ফিরে এসেছি,' যোগ করেন তিনি।

মামুনের মতো একই অবস্থা একই গ্রামের খামারি শুকুর আলির। এ বছর তিনি ১৩টি গরু নিয়ে ঢাকার কয়েকটি হাট ঘুরে মাত্র দুটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। তিনিও জানিয়েছেন, কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় ১১টি গরু ফিরিয়ে এনেছেন।

শুকুর ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তিন লাখ টাকার গরু এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি কেউ দামই বলেনি। রাজধানীর তিনটি হাট ঘুরে গরু বিক্রি করতে না পেরে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে সেগুলো ফিরিয়ে তিনি। এখন গরুগুলোর লালনপালন নিয়ে পরেছেন চিন্তায়।

কোরবানির ঈদ ছাড়া বড় গরু খুব একটা বিক্রি করা হয় না বলে জানান শুকুর আলী। এ বছর ঈদের মৌসুমে রাজধানীর বাজারে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকায় অধিকাংশ খামারি তাদের বড় গরুগুলো বিক্রি করতে না পেরে ফিরিয়ে এনেছেন বলে জানান তিনি।

তার দাবি, করোনা মহামারির কারণে এ বছর রাজধানীর কোনো হাটেই আশানুরূপ ক্রেতার উপস্থিত না হওয়ায় বড় গরুর ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে লোকসানে পড়েছেন খামারিরা।

প্রাণিসম্পদ সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দেশে কোরবানির জন্য প্রায় এক কোটি ১৯ লাখ কোরবানির পশু প্রস্তুত করা হলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে কোরবানি হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ নয় হাজার পশু। অবিক্রিত থেকে গেছে বাকিগুলো।

Comments

The Daily Star  | English

Women MPs in reserved seats: How empowered are they really?

Fifty-two years ago, a provision was included in the constitution to reserve seats for women in parliament for a greater representation of women in the legislative body.

10h ago