কর আওতার বাইরে ৮০ হাজার কোম্পানি

এসব তথ্য রূপকথার অনিয়ম, আর্থিক অব্যবস্থাপনাকেও হার মানায়: টিআইবি

কীভাবে এতদিন প্রায় ৮০ হাজার কোম্পানি কর ব্যবস্থার আওতার বাইরে ছিল তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সেইসঙ্গে এর দায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের বলে মনে করে টিআইবি।

কীভাবে এতদিন প্রায় ৮০ হাজার কোম্পানি কর ব্যবস্থার আওতার বাইরে ছিল তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সেইসঙ্গে এর দায় সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের বলে মনে করে টিআইবি।
আজ সোমবার টিআইবি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিষয় তুলে ধরে। এতে করের আওতার বাইরে থাকা এসব কোম্পানি শনাক্ত এবং কর ব্যবস্থার আওতায় আনার এনবিআর পারিচালিত টাস্কফোর্সের চলমান প্রক্রিয়া ও উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায় টিআইবি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বিশাল সংখ্যক কোম্পানি এতদিন কীভাবে কর ব্যবস্থার আওতার বাইরে ছিল এবং এর মাধ্যমে ঠিক কী পরিমাণ কর ফাঁকির ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়াগত দুর্বলতা চিহ্নিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর করপোরেট কমপ্লায়েন্স নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্সের করজালের বাইরে থাকা বিপুল পরিমাণ কোম্পানি খুঁজে বের করাই প্রমাণ করে দেশে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সুশাসনের ঘাটতি কতটা প্রকট।' 
তিনি বলেন, একটি নিবন্ধিত কোম্পানি অর্ধশতাব্দী ধরে ব্যবসা করছে অথচ কখনোই কর দেয়নি, আবার মাত্র দুটি ঠিকানায় ১৪০০ কোম্পানির নিবন্ধন কিংবা একই ব্যক্তি ৪৬টি কোম্পানির পরিচালক কিন্তু টিআইএন আছে মাত্র ৪টির! এসব তথ্য রূপকথার অনিয়ম ও আর্থিক অব্যবস্থাপনাকেও হার মানায়।'
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'একদিনে বা রাতারাতি এই বিপুল সংখ্যক কোম্পানি কর ফাঁকি দেওয়ার সংস্কৃতির চর্চা যেমন শুরু করেনি, তেমনি স্বল্পসময়ের ব্যবধানেও তারা এই অনৈতিক সুযোগ গ্রহণ করছে না। সংশ্লিষ্ট অনেকেরই যোগসাজশে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তাদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনার পাশাপাশি এক্ষেত্রে প্রক্রিয়াগত প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা দ্রুত নিরসন জরুরি।' 
টিআইএনবিহীন কোম্পানি সম্পর্কে টাস্কফোর্সের প্রাথমিক প্রতিবেদনে 'দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বেদনাক্রান্ত দেশের করুণ চিত্র' ও 'দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের ঘাটতি' শীর্ষক মন্তব্য দুটির সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'এর দায় সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের। কেন না এক ঠিকানায় শতাধিক কোম্পানির নিবন্ধন দেওয়া হলেও তা চিহ্নিত করার ব্যবস্থা যে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর আরজেএসসির নেই, সেটি যেমন স্পষ্ট তেমনি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সহযোগিতাকারী এক শ্রেণির 'ল' ফার্মের দায়হীন আচরণ সমানভাবে দায়ী।'
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, '৭৮ হাজারেরও বেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের টিআইএন থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৬ হাজারের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া এবং এর মধ্যে অর্ধেক প্রতিষ্ঠানই আবার ভুয়া নিরীক্ষা প্রতিবেদন জমা দিয়ে বিপুল কর ফাঁকি দেওয়ার বিষয় আলোচিত হলেও এসব যাচাইয়ে এনবিআরের কার্যকর উদ্যোগের ঘাটতি ছিল এতদিন। তাই ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে এখনই কার্যকর কর্মকৌশল নির্ধারণ ও সংস্থাগুলোর মধ্যকার প্রযুক্তিগত সংযোগ ও সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে।'

সেইসঙ্গে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, 'ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সবাই যাতে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে সহজ পদ্ধতিতে রাজস্ব কর প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে কাঙিক্ষত ভূমিকা রাখতে পারে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা জরুরি। একইসঙ্গে, করের আওতায় আনার চলমান প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যাতে হয়রানি বা হেনস্তার শিকার না হয়, সে ব্যাপারেও সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানাই।'

Comments

The Daily Star  | English

Goods worth Tk 16k imported at Tk 2.59 crore

State-run Power Grid Company of Bangladesh Ltd (PGCBL) imported 68 kilograms of tower bolts, nuts and washers from India for a whopping $2,39,695 or Tk 2.59 crore, which is 1,619 times the contract value.

2h ago