সড়ক ও জনপথের প্রকল্পে জবাবদিহি নিশ্চিত করুন

সরকারি আরও একটি প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা এবং ফলশ্রুতিতে প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়ার বিষয়টি হতাশাজনক। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের আংশিক পুনর্নির্মাণের (৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ) এই প্রকল্পটি হাতে নেয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে।

সরকারি আরও একটি প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারা এবং ফলশ্রুতিতে প্রকল্পের মোট ব্যয় বাড়ার বিষয়টি হতাশাজনক। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (আরএইচডি) যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের আংশিক পুনর্নির্মাণের (৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ) এই প্রকল্পটি হাতে নেয় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদিত প্রকল্পটির প্রাথমিক বাজেট ছিল ৩২১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা এবং ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ পর্যন্ত প্রকল্পের সময়সীমা তিন বার বাড়ানো হয়েছে, কিন্তু তাও যথেষ্ট হয়নি। এখন পরিকল্পনা কমিশন নতুন সময়সীমা হিসেবে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এই সংশোধিত সময়সীমা অনুমোদন পেলে প্রকল্পের সার্বিক খরচ বেড়ে দাঁড়াবে ৩৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকায়।

পরিকল্পনা কমিশনের পাশাপাশি আমরাও প্রকল্পে এ ধরনের বিলম্ব ও সংশোধন নিয়ে চিন্তিত, যার ফলশ্রুতিতে জনগণের প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে, বিশেষ করে জাতীয় মহাসড়কের মাত্র ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি অংশবিশেষ নির্মাণের ক্ষেত্রে। পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছিল রাস্তার অপ্রতুল ঘনত্বের কারণ দেখিয়ে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি মাল বহনকারী ট্রাক চলাচলের কারণে গত চার বছরে রাস্তাটির অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে এবং ফলশ্রুতিতে, প্রকল্পের নকশাতেও পরিবর্তন আনতে হয়েছে। এছাড়াও, প্রকল্পে তিনটি ট্রাক বে (ট্রাক থেকে মাল ওঠানো-নামানোর অবকাঠামো) নির্মাণের কাজ যুক্ত করা হয়েছে এবং এক্ষেত্রে 'রাস্তাকে প্রশস্ত' করার জন্য আরও টাকার প্রয়োজন হবে। যশোর আরএইচডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার প্রায় এক বছর পর টেন্ডার প্রক্রিয়া সমাপ্ত হয় এবং ২০১৮ সালের মার্চ ও মে মাসে ঠিকাদারদের কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এরকম অসংখ্য সরকারি প্রকল্প আছে যেগুলো অনেক দিন ধরে বিলম্বিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে, জনগণের অর্থ বছরের পর বছর ধরে অপচয় হচ্ছে এবং এই অর্থ ব্যয়ের কোনো কার্যকরী ফল ভোগ করা তো দূরে থাক, কোনো দৃশ্যমান ফলাফলও আমরা দেখতে পাই না। আরএইচডির অন্তত ৮০টি প্রকল্পের জন্য গত অর্থবছরে সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। সুতরাং সরকারের অন্যান্য সংস্থার প্রকল্পগুলোর কী অবস্থা, সেটা সহজেই অনুমান করা যায়। বিষয়টি যদি এরকম হয়, বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সম্পদ বরাদ্দ হতেই থাকবে কিন্তু জনগণ প্রত্যাশা অনুযায়ী উন্নতমানের অবকাঠামো ও সেবা পাবে না, তাহলে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন অত্যাবশ্যক।

আমরা পরিকল্পনা কমিশনের কাছে আহ্বান জানাই এসব প্রকল্পের পরিকল্পনাগুলোকে আরও গভীরভাবে নিরীক্ষণ করতে এবং প্রকল্প পরিচালকদের দেরির জন্য জবাবদিহির আওতায় আনতে। এই কাজটি করতে হবে প্রকল্পের বাজেট ও সময়সীমা বাড়ানোর আবেদনের অনুমোদন দেওয়ার আগেই। যদি কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বিভিন্ন প্রকল্পে দেরি হতে থাকে, তাহলে আমরা মনে করি এতে দেশের সার্বিক উন্নয়নে মঙ্গলের চেয়ে অমঙ্গলই বেশি হবে।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

6h ago