করোনাভাইরাস

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে কারিগরি পরামর্শক কমিটির ৮ সুপারিশ

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আটটি সুপারিশ দিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সবার মঙ্গল ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে সব ধরনের ঝুঁকি কমাতে, স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের ওপর যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা কমাতে এবং করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।
ছবি: ইহতিশাম কবির

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে আটটি সুপারিশ দিয়েছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সবার মঙ্গল ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে সব ধরনের ঝুঁকি কমাতে, স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এবং তাদের ওপর যে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে তা কমাতে এবং করোনার সংক্রমণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এতে আরও বলা হয়েছে—শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলে সে ব্যাপার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা (৫ বছরের কমবয়সী শিশু ছাড়া ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী)।

কেন্দ্রীয়ভাবে সব শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত মানসম্পন্ন এবং সঠিক মাপের মাস্কের ব্যবস্থা ও বিতরণ করার পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি, যেমন হাত পরিষ্কার রাখা (হাত ধোয়া/হাত জীবাণুমুক্তকরণ স্টেশন স্থাপন করা) ও সাধারণ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) তৈরি করা প্রয়োজন।

গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে পরামর্শক সাম্প্রতিক বেঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষক ও কর্মচারীদের করোনার টিকা নেওয়া থাকতে হবে। তারা দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিন পার হওয়ার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে প্রথম ডোজের ১৪ দিন পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৮ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের দ্রুত টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

শ্রেণিকক্ষে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নির্দিষ্ট ক্লাস কোনটি সপ্তাহের কোন দিন হবে তা ভাগ করে দেওয়া যেতে পারে। যেমন, প্রথম দিকে পরীক্ষার্থীদের ক্লাস প্রতিদিন খোলা রাখা ছাড়া, অন্যদের ক্লাস সপ্তাহে এক বা দুই দিন খোলা রাখা যেতে পারে। এতে করে একটি নির্দিষ্ট দিনে যে ক্লাসটি খোলা থাকবে তার শিক্ষার্থীরা অন্যান্য খালি শ্রেণিকক্ষগুলো ব্যবহার করে তাতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে বসতে পারবে। প্রাতঃসমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে।

এ ছাড়া, প্রথম দিকে স্বল্প সময়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খোলা রাখা যাতে করে খাবার গ্রহণের জন্য মাস্ক খোলার প্রয়োজন না হয়।

আবাসিক সুবিধাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাফেটেরিয়া, ডাইনিং, টিভি/স্পোর্টস রুম ইত্যাদি) বন্ধ রাখা। রান্নাঘর থেকে রুমগুলোতে সরাসরি খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা। একাধিক শিক্ষার্থীর একই বিছানা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা। মাদ্রাসায় এক সঙ্গে নামাজ, ধর্মীয় সমাবেশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নির্দেশনা মেনে চলা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার খুলে দেওয়ার আগে 'করণীয়' ও 'বর্জনীয়' কাজ সম্পর্কে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মচারীদের অরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে সুস্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।

এই অরিয়েন্টেশন সীমিত উপস্থিতি ও নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে সশরীরে আয়োজন করা যেতে পারে তবে প্রয়োজনে অনলাইন সেশন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

যে সব শিক্ষার্থীদের কোভিড-১৯'র লক্ষণ থাকবে তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিন/ আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন/ আইসোলেশন থাকাকালে তাদের শুশ্রূষার জন্য নির্দেশনাও এই অরিয়েন্টেশনে থাকতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীর রোগের লক্ষণ পাওয়া যাবে অথবা তাদের পরিবারের কারো এ ধরনের লক্ষণ থাকবে অথবা কোভিড-১৯ রোগ পাওয়া যাবে তাদেরকে অনুপস্থিত গণ্য না করে ১৪ দিন বড়িতে থাকার অনুমতি দিতে হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে সংক্রমণ পর্যবেক্ষণ ও দৈনিক রিপোর্ট করতে হবে। নির্বাচিত কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা এবং সার্ভেইলেন্সের প্রোটোকল তৈরি ও বাস্তবায়ন করতে হবে। যে সব জেলায় ল্যাব আছে সেখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই সার্ভেইলেন্সের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে।

যেসব জেলায় সংক্রমণের হার বেশি সেই জেলাগুলোয় আরও নিবিড় সার্ভেইলেন্স থাকা উচিত।

সব বিধি-নিষেধ সুষ্ঠুভাবে পালন নিশ্চিত করতে মনিটরিং টিম গঠন করে প্রতিদিন মনিটরিং করতে হবে।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা সভার সভাপতিত্ব করেন। কমিটির আমন্ত্রণে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা আলোচনায় অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

All educational institutions reopen after heatwave-induced closures

After several closures due to the heatwave sweeping the country, all primary and secondary schools, colleges, madrasas, and technical institutions across the country resumed classes today

1h ago