সম্পাদকীয়

স্কুলগুলোতে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে

সরকার গত রোববার পুনরায় স্কুল খোলার জন্য তাদের কৌশল প্রকাশ করেছে। প্রায় ১৮ মাসের দীর্ঘ বিরতির পর শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। পূর্বে আমরা এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছি যে, শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে অবশ্যই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অন্যান্য স্কুল কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে। এই বিষয়ে, সরকার পুনরায় স্কুল খোলার পরিকল্পনায় অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং আমরা আশা করি সেগুলো অত্যন্ত যত্ন সহকারে করা হয়েছে।
শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে অবশ্যই স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে। ছবি: ইউনিসেফ বাংলাদেশ

সরকার গত রোববার পুনরায় স্কুল খোলার জন্য তাদের কৌশল প্রকাশ করেছে। প্রায় ১৮ মাসের দীর্ঘ বিরতির পর শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। পূর্বে আমরা এই বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছি যে, শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে অবশ্যই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অন্যান্য স্কুল কর্মীদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে। এই বিষয়ে, সরকার পুনরায় স্কুল খোলার পরিকল্পনায় অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং আমরা আশা করি সেগুলো অত্যন্ত যত্ন সহকারে করা হয়েছে।

পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য হলেও এটিই যথেষ্ট নয়। তা কার্যকর করার বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সরকারকে তার সর্বোচ্চটুকু পালন করতে হবে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, যদিও সরকার ইতোমধ্যেই পুনরায় স্কুল খোলার নির্দেশিকা কী হবে সে সম্পর্কে ইঙ্গিত দিয়েছে, তবে স্কুল খোলার সময় নির্ধারণ হওয়ার কয়েকদিন আগে বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছে। তার মানে এই কয়েকদিনের মধ্যে এখনও অনেক কিছু করতে হবে। এটা স্বাভাবিকভাবেই সব স্কুলের ওপর অনেক চাপ পড়তে যাচ্ছে, যদিও প্রতিটি স্কুল এই চাপ সামলানোর জন্য সমানভাবে প্রস্তুত নয়। সরকারকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে যাতে তারা নিশ্চিত করতে পারে যে, স্কুলগুলো তার সব উপস্থিতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য প্রস্তুত। সেগুলো হলো— স্যানিটাইজিং সুবিধার জন্য তহবিল, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অন্যান্য কর্মীদের জন্য অতিরিক্ত মাস্কের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশিকা যাতে যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয় তা নিশ্চিত করা স্কুলের দায়িত্ব। মাস্ক অনেকের কাছে অস্বস্তিকর মনে হয়। তাই শিক্ষার্থীরা সব সময় মাস্ক পরতে চায় না বা কঠোর স্যানিটাইজিং নিয়ম মেনে চলতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক কর্মীদের নিশ্চিত করতে হবে যে, এই নির্দেশিকাগুলো শিক্ষার্থীদের নিজেদের কল্যাণে মেনে চলতে হবে। সরকারের নির্দেশিত সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে যেনো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য স্কুলগুলোকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় বরাদ্দ ও সমন্বয় করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে, সরকারও সুপারিশ করেছে যে পিইসিই, এসএসসি ও এইচএসসির পরীক্ষার্থী ছাড়া বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের এখন সপ্তাহে একদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে এবং স্কুলগুলোকে যথাযথভাবে পরিকল্পনা করতে হবে যে, কোন শিক্ষার্থীরা কোন দিন ক্লাসে উপস্থিত হবে।

পুনরায় স্কুল চালু করা কতটা ভালোভাবে কাজ করবে তা নিয়ে এখনো অনেক অনিশ্চয়তা আছে। তাই সরকারের সামগ্রিক পরিকল্পনা এবং প্রতিটি স্কুলের পৃথক পরিকল্পনার জন্য একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নমনীয়তা প্রয়োজন। দিন শেষে, শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য যে স্কুল খোলা হচ্ছে সে বিষয়ে দৃষ্টি সরানো উচিত নয়। এভাবে, ভবিষ্যতে কোনো পরিবর্তন বা উন্নয়নে দ্রুত ও সঠিকভাবে সাড়া দিতে জরুরি পরিকল্পনা থাকা উচিত।

স্কুল পুনরায় চালু করা অপরিহার্য ধাপ হলেও সরকারকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ইতোমধ্যে শিক্ষার অনেক ক্ষতি হয়েছে। যদি পুনরায় স্কুল খোলার প্রথম ধাপটি সফল প্রমাণিত হয়, তাহলে অবশ্যই দ্বিতীয় ধাপে ক্ষতিগুলো পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের পরিকল্পনা থাকতে হবে। সে জন্য সরকারের উচিত অবিলম্বে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া এবং পরবর্তী কৌশল প্রণয়ন করা।

অনুবাদ করেছেন সুমন আলী

 

Comments

The Daily Star  | English

Army now has public trust as it stands by the people: PM

Prime Minister Sheikh Hasina today said the country's army has earned public trust and confidence by standing beside the people

34m ago