বিমানবন্দরে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে দেরি: বেবিচক ও ৭ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় জরুরি

গত বুধবারের খবরে বলা হয়েছে, ৭টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করবে। সত্যিই তা হবে বলে মনে হচ্ছে না।
ছবি: পলাশ খান/ স্টার

গত বুধবারের খবরে বলা হয়েছে, ৭টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৩ থেকে ৬ দিনের মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করবে। সত্যিই তা হবে  বলে মনে হচ্ছে না।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাজে ফিরতে না পারা এবং কয়েক মাস ধরে আটকে থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য এই ল্যাবগুলো খুব প্রয়োজন। গত ৪ আগস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার শর্ত দিয়েছে, উড়োজাহাজে ওঠার আগে প্রবাসী শ্রমিকদের ৬ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ থাকতে হবে। সনদটি হতে হবে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার।

এ ঘোষণার পর ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের বিমানবন্দরে আরটি-পিসিআর ল্যাবের ব্যবস্থা করে। কিন্তু, বাংলাদেশে এ ঘটনা ঘটেনি।

দেশে এসব ল্যাব স্থাপনের কাজ এখনো কতটা পিছিয়ে, গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই কয়েকটি সমস্যার সমাধান করতে হবে।

প্রথমত, পরীক্ষার ফল গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচিত ৭টি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার অনুমোদিত পদ্ধতির মানদণ্ড থাকতে হবে।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) ওই ৭ প্রতিষ্ঠান বলেছে, বিমানবন্দরের পার্কিং ভবনের ছাদে যে জায়গা তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে তা আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুপযুক্ত। তবে, বেবিচক এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে অনিচ্ছুক বলে মনে হচ্ছে। বেবিচক প্রতিনিধিরা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে 'নিজ খরচে ল্যাব স্থাপনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে' এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ল্যাব স্থাপন করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে 'ব্যবস্থা' নেওয়া হবে।

যেখানে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন অগ্রাধিকার হওয়া উচিত, সেখানে বেবিচকের এ প্রতিক্রিয়া উপেক্ষা করা কঠিন। অভিবাসী শ্রমিক ও তাদের চাহিদার প্রতি সরকারের উদাসীনতার কারণে গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারছেন না এবং উপার্জন করতে পারছেন না। বেবিচককে অবশ্যই বুঝতে হবে, এখন দ্বন্দ্ব তৈরি করার বা দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করার সময় নয়।

শাহজালাল বিমানবন্দর ছাড়া আরও দুটি বিমানবন্দরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রী নিজে নির্দেশ দেওয়ার পরও কাজের যে অবস্থা, তা হতবাক হওয়ার মতো।

এই ল্যাব স্থাপনের দাবিতে চলতি সপ্তাহের শুরুতে শ্রমিকদের আমরণ অনশনের পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টির আশু প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছে বলে মনে হচ্ছে না।  

আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিশেষ করে বেবিচককে একে অপরকে সহযোগিতা করতে এবং ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দ্রুত আরটি-পিসিআর ল্যাব স্থাপন করতে অনুরোধ করছি।

কিন্তু, তাড়াহুড়ো যেন না হয়। বিদেশগামী শ্রমিকরা যেন আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন না হয়, সেজন্য সেবার মান নিশ্চিত করতে হবে।  

Comments

The Daily Star  | English

The story of Gaza genocide survivor in Bangladesh

In this exclusive interview with The Daily Star, Kamel provides a painful firsthand account of 170 days of carnage.

1d ago