ইমো হ্যাকারদের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ আদালতের
দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত সংবাদ আমলে নিয়ে নাটোরের লালপুরে 'ইমো' হ্যাকারদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করতে পুলিশকে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার বিকেলে নাটোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সাঈদ এই আদেশ দেন।
গত ৩১ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টারের ইংরেজি অনলাইন সংস্করণে 'কনড অন ইমো' শিরোনামে প্রকাশিত একটি সংবাদ ও গত ১৪ সেপ্টেম্বর দ্য ডেইলি স্টারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত 'নাটোরের একটি গ্রামের চক্র কীভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে?' শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদনসহ আরও দুটি গণমাধ্যমের সংবাদ আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়।
৩১ আগস্ট দ্য ডেইলি স্টারে ইমো হ্যাকিং সম্পর্কিত প্রতিবেদনে ও ১৪ সেপ্টেম্বর প্রচারিত ভিডিও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়, হ্যাকাররা কীভাবে অনলাইন যোগাযোগের অ্যাপ্লিকেশন 'ইমো'র মাধ্যমে প্রবাসীদের নম্বর সংগ্রহ করে। পরবর্তী, একটি ওয়ানটাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পাঠিয়ে সেই আইডি হ্যাক করে। এরপর তারা সেই আইডি থেকে এক সপ্তাহ কথোপকথন পর্যবেক্ষণ করে ওই আইডি ব্যবহারকারীর আত্মীয়দের কাছে কল করে দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে আদালত তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, 'নাটোরের লালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে একটা সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'ইমো' হ্যাক করে প্রতিদিন প্রবাসীসহ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, যা একটি আমলযোগ্য অপরাধ।'
নাটোর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাজু আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আদালত তার আদেশে অপরাধটিকে দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩ ও ৩৪ ধারার অধীনে দণ্ডনীয় আমলযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেন।'
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৩ ধারার অপরাধ সংঘটনের শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৩৪ ধারায় সংঘটিত অপরাধের শাস্তি ১৪ বছরের কারাদণ্ড ও এক টাকা অর্থদণ্ড।
আদালত বলেন, 'সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে একটি শক্তিশালী প্রতারক চক্র বিভিন্ন উপায়ে হাজারও মানুষের কাছ থেকে দেদারসে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এই অপরাধগুলো মূলত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেই সংগঠিত অপরাধ। এই অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বেড়ে যাবে। সে কারণে এই অপরাধী চক্রকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।'
আদালত সংগঠিত চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সংবাদগুলো পর্যালোচনা করে উপপরিদর্শকের নিচে নয় এমন কর্মকর্তাকে বাদী হয়ে নিয়মিত মামলা রুজু করার জন্য লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এ ছাড়া, আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো নির্দেশ এবং একই দিনে পরবর্তী আদেশের জন্য নির্ধারণ করেছেন বিচারক।
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, 'আদালতের আদেশের কপি পেলেই আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comments