বাল্য বিয়ে: স্কুলে মেয়ে শিশুদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় এমজেএফর উদ্বেগ
স্কুলগুলোর বিভিন্ন শ্রেণিতে মেয়ে শিশুদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়ায় ও ছাত্রীদের বেশিরভাগই বাল্য বিয়ের শিকার হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।
আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন উদ্বেগ প্রকাশ করে।
করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় বছর স্কুল বন্ধ থাকার পরে গত ১২ সেপ্টেম্বর শর্ত সাপেক্ষে স্কুল খুলে দেয় সরকার।
এতে আরও বলা হয়, এই হার অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্য বিয়ে মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, বিদ্যালয় খোলার পর দেখা যায় কুড়িগ্রামের সরদব উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ৯ জন ছাত্রীর মধ্যে একজন শ্রেণিকক্ষে ফিরে এসেছে। বাকিদের বিয়ে হয়ে গেছে। ওই বিদ্যালয়ে ২২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩ জন মেয়ে শিক্ষার্থী ছিল, যাদের বেশির ভাগেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সাতক্ষীরার আলীপুর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অন্তত ৫০ জন ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়ে আর শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসেনি। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার একটি স্কুলেই অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার লেতু মন্ডল স্কুলের ২৫ জন ছাত্রী, বাগেরহাটের শরণখোলার এক উপজেলায় স্কুল ও মাদ্রাসায় প্রায় ৬ শতাধিক ছাত্রী ও রাজশাহীতে প্রায় ৫ শতাধিক ছাত্রীর বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া, বগুড়া, লালমনিরহাট, লক্ষ্মীপুর ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্কুল থেকেও মেয়ে শিশুদের বাল্য বিয়ের তথ্য জানা গেছে।
এমজেএফ মনে করে, বাল্য বিয়ে বন্ধ করা সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার কর্মসূচিগুলোর একটি। তাই মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করে গ্রাম পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায়ের স্কুলে করোনার পূর্বে ভর্তি ও বর্তমান উপস্থিতি বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের উপস্থিতির বিষয়টি জানার ব্যবস্থা করা। করোনাকালে কত শিক্ষার্থী ঝরে গেছে, তাদের মধ্যে কত জন বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে সেসব ছাত্রীদের চিহ্নিত করে স্কুলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া এবং সম্ভব হলে তাদের বিকল্প ব্যবস্থায় পড়াশোনা চালু রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি বাল্য বিয়ে যারা নিবন্ধন করেছেন সেই নিবন্ধকদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। পাশাপাশি বাল্য বিয়ে নিরোধ আইন, ২০১৭ অনুয়ায়ী ইউনিয়ন পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ কমিটিকে সত্রিুয় করা এবং অভিভাকদের নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা।
Comments