এরাই কি মূল পরিকল্পনাকারী?

এই সত্যটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী আরও সতর্ক এবং সক্রিয় থাকলে গত ১৩ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হওয়া বেশিরভাগ হামলা ঠেকানো যেত।
সৈকত মণ্ডল ও রবিউল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

এই সত্যটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী আরও সতর্ক এবং সক্রিয় থাকলে গত ১৩ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি, মন্দির ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হওয়া বেশিরভাগ হামলা ঠেকানো যেত।

তবে হামলার সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার একটি সুসংবাদ। আমরা সবসময়ই বিশ্বাস করেছি যে হামলাটি পরিকল্পিত ছিল। যারাই এটি করুক না কেন, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছিল। কোনো বিবেকবান মানুষ, সে মুসলমান হোক কিংবা হিন্দু, কোনো পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা করতে পারে না। এটি জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি এবং ক্ষোভের জন্ম দেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

তুলনামূলকভাবে দ্রুত সময়ের মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করায় আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রশংসা করি। কিন্তু আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, এই সুপরিকল্পিত হামলাগুলো গ্রেপ্তারকৃত অপরাধীদের মস্তিষ্ক থেকেই যে উৎপত্তি হয়েছে এমনটা মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা বিশ্বাস করি, এসব ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে, যারা পর্দার আড়ালে থেকে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

রংপুরের পীরগঞ্জে সহিংসতার কারণে গ্রেপ্তার সৈকত ও তার সহযোগী সম্ভবত নির্দেশ বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী। তারা কেবল মূল হোতাদের নির্দেশে কাজ করেছেন।

র‌্যাবের একজন মুখপাত্রের মতে, পীরগঞ্জের ঘটনাটি সৈকত এবং উজ্জ্বল হোসেন ও পরিতোষ সরকার নামে দুজনের মধ্যকার ব্যক্তিগত শত্রুতার ফলে হয়েছে। উজ্জ্বল হোসেন ও পরিতোষ সরকারকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।

র‍্যাবের দেওয়া এই তথ্য মেনে নেওয়া কঠিন। আমরা বিশ্বাস করি, ঘটনাটি পারস্পরিক শত্রুতার ফলে ঘটেনি। এর পেছনে আরও অনেক বেশি কিছু রয়েছে। পরিতোষ কী উদ্দেশ্যে এমন একটি হিংসাত্মক ছবি আপলোড করবে? এই ধরনের ছবি যে তার নিজের সম্প্রদায়ের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এটা কি তার বোধগম্য ছিল না? কুমিল্লায় সহিংসতার ঘটনায় জড়িত অপরাধী ইকবাল কেন একজন হিন্দু দেবতার পায়ে কোরআন শরীফ রেখেছিলেন তা খুঁজে বের করা জরুরি। সে কি একাই এই কাজটি করেছে, নাকি তাকে দিয়ে করানো হয়েছিল? সে একাই এই কাজ করেছে এটি বিশ্বাস করা কঠিন। অন্যান্য জেলায়ও বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এই হামলাগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা কিংবা কেবল একটি ঘটনার কারণে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক আক্রমণ হিসেবে উড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। আমরা বিশ্বাস করি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করার জন্য একটি অশুভ পরিকল্পনা চলছে।

তাই, দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর এসব হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করা জরুরি। এটি একটি গুরুতর জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু এবং যতো তাড়াতাড়ি এসব তথ্য উদঘাটন করা হবে, ভবিষ্যতে আমাদের জাতির ওপর এই ধরনের হামলা প্রতিরোধ করতে আমরা ততো বেশি প্রস্তুত থাকতে পারবো।

Comments

The Daily Star  | English
Road Transport Act-2018

Why can’t road crashes be curbed?

The Road Transport and Highways Division has called a meeting tomorrow with the divisional commissioners and deputy inspector general of ranges to find out why the number of road crashes cannot be controlled.

14h ago