ইংল্যান্ডকে বিন্দুমাত্র চ্যালেঞ্জও জানাতে পারল না বাংলাদেশ

বুধবার আবুধাবিতে বাংলাদেশকে ৮  উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে  টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। আগে ব্যাট করে মাত্র ১২৪ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহরা।  ৩৫ বল আগেই ওই রান অনেকটা তুড়ি মেরে উঠিয়ে নেয় ওয়েন মরগ্যানের দল
Jeson Roy
৩৭ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা জেসন রয়। ছবি- আইসিসি

ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো উইকেটেও বেশিরভাগ ব্যাটসম্যানের অ্যাপ্রোচ দেখা গেল নেতিবাচক। অলআউট না হলেও এলো না জুতসই রান। এরপর দুর্বল শরীরী ভাষায় বাংলাদেশের বোলিং হলো সাদামাটা। টাইমাল মিলসদের এনে দেওয়া মঞ্চে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে কাজ সারলেন জেসন রয়। মাহমুদউল্লাহর দল ইংল্যান্ডের সঙ্গে সামান্য লড়াইও করতে পারল না।

বুধবার আবুধাবিতে বাংলাদেশকে ৮  উইকেটে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে  টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৪ রান করেছিলেন মাহমুদউল্লাহরা। ৩৫ বল আগেই ওই রান অনেকটা তুড়ি মেরে উঠিয়ে দেয় ওয়েন মরগ্যানের দল। এই হারে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেল।

সহজ রান তাড়ায় ইংলিশদের নায়ক ওপেনার রয়। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের উইকেটের 'আসল' ভাষা বুঝিয়ে মাত্র ৩৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ রান করেন তিনি। ডাভিড মালান অপরাজিত থাকেন ২৫ বলে ২৮ রানে।

এর আগে ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংলিশদের অনায়াসে জেতার পরিস্থিতি তৈরি করে দেন পেসার টাইমাল মিলস।

রান তাড়ায় নেমে সাবলীল ব্যাট করতে থাকে ইংল্যান্ড। সাকিবের প্রথম বলেই বাউন্ডারি পাঠিয়ে শুরু জেসন রয়ের। জস বাটলার কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন। পরে তিনিও রান বাড়াতে থাকেন। পঞ্চম ওভারে নাসুমের বলে ব্যাকফুটে লফটেড শট খেলে ১৮ রান করা বাটলারের বিদায়ে ভাঙ্গে ওপেনিং জুটি। ততক্ষণে অবশ্য ৩৯ রান এসে গেছে।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেও আসে জুতসই রান। সহজ লক্ষ্যে প্রথম ৬ ওভারে ১ উইকেটে চলে আসে ৫০ রান। পাওয়ার প্লের ঠিক পর আক্রমণে আসা শেখ মেহেদীকে চার-ছয়ে উড়িয়ে রান বাড়ান রয়।

বিস্ফোরক এই ওপেনার সময়ের সঙ্গে মেলেন ডানা। ৩৩ বলে তুলে নেন ফিফটি। তার ঝড়ে খেলা হয়ে যায় একদম সহজ। বাংলাদেশি বোলারদেরও দেখায় একদমই সাদামাটা। আনুষ্ঠানিকতা সারতে একদমই দেরি করার প্রয়োজন হয়নি ইংল্যান্ডে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে চরম বাজে অবস্থায় থাকা লিটন দাস এদিন শুরুতেই স্ট্রাইক নিয়েছিলেন। প্রথম ওভারে মঈন আলিকে দুই চার মেরে ইতিবাচক কিছুর আভাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু মঈনের দ্বিতীয় ওভারেই স্লগ সুইপ ব্যাটে নিতে পারেননি। সহজ ক্যাচে ফেরেন ৯ রান করে।

ঠিক পরের বলেই আলত শটে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় রানে থাকা নাঈম শেখের। আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই ওপেনার এবার আউট হন ৭ বলে ৫ রান করে।

১৪ রানে দুই ওপেনারকে হারানোর ধাক্কা সামলাতে না সামলাতে বিদায় সাকিবেরও। তিনে নামা অলরাউন্ডার ৭ বলে মাত্র ৪ রান করে ক্রিস ওকসের বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ উঠিয়ে বিদায় নেন।

পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তুলে কেবল ২৭ রান। পাওয়ার প্লের পরে রান বাড়াতে থাকেন মুশফিকুর রহিম। আগের দিনের ছন্দ দেখা যাচ্ছিল তার ব্যাটে। যদিও খুব বেশি আগ্রাসী হতে পারছিলেন না।

অনিয়মিত বোলার লিয়াম লিভিংস্টোন এসে থামিয়ে দেন মুশফিককে। লিভিংস্টোনের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি। রিভিউ নিয়ে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে আনে ইংল্যান্ড। মুশফিক ফেরেন ২৯ বলে ৩০ করে।

ছয়ে নেমে আফিফ হোসেনের বিদায় বড় করুণ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৫ রানেই শেষ হয় এই তরুণের দৌড়। ১৩তম ওভারে রানের গতিও তখন বেশ মন্থর। সেই চাকা আর সচল করতে পারেননি অধিনায়ক। ২৪ বল খেলে ১৯ রান করে লিভিংস্টোনের বলে ক্যাচ উঠিয়ে তিনিও বিদায় নেন।

শেখ মেহেদী দুই চার মেরেছিলেন। কিন্তু বাড়তে পারেননি। প্রায় ৮ ওভার বাকি থাকতে নামা নুরুল হাসান সোহান শেষ অবধি টিকে থেকেও দ্রুত রান আনার চাহিদা মেটাতে পারেননি। নয় নম্বরে নামা নাসুম আহমেদই মেটান তা। ১৯তম ওভারে গিয়ে তার সৌজন্যেই আসে ইনিংসের প্রথম ছক্কা। আদিল রশিদকে টানা দুই ছয় মেরে দলের পুঁজি ১২০ পার করতে ভূমিকা রাখেন তিনি। শেষ ওভারে আউট হওয়া কিপার ব্যাটসম্যান সোহান ১৮ বলে ১৬ রানের মন্থর ইনিংস খেলে তার দলে থাকার জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন।

অল্প এই পুঁজি নিয়ে বোলারদের লড়াই করা ছিল কঠিন। তবে তাদের শরীরী ভাষাতেও হারার আগে দেখা দেয় হাল ছেড়ে দেওয়ার গান। এমন ম্যাচে ফল যা হওয়ার হয়েছে তাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ:  ২০ ওভারে ১২৪/৯    (লিটন ৯, নাঈম ৫, সাকিব ৪, মুশফিক ২৯, মাহমুদউল্লাহ ১৯, আফিফ ৫, সোহান , শেখ মেহেদী ১১, নাসুম ১৯*, মোস্তাফিজ ০    ;  মঈন ২/১৮  , ওকস ১/১২ , আদিল ০/৩৫,  জর্দান ২/১৫,  মিলস ৩/২৭, লিভিংস্টোন ২/১৫)

ইংল্যান্ড: ১৪.১ ওভারে ১২৬/২    ( রয় ৬১ , বাটলার ১৮, মালান ২৮*  , বেয়ারস্টো  ৮*; সাকিব ০/২৪, মোস্তাফিজ ০/২৩, শরিফুল ১/২৬, নাসুম ১/২৬ , শেখ মেহেদী ০/২১)

ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জেসন রয়।

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

6h ago