গণ অধিকার পরিষদ সদস্যদের ওপর হামলা নিন্দনীয়

গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় নবগঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ যেভাবে হামলা চালিয়েছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
ছবি: সংগৃহীত

গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় নবগঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ যেভাবে হামলা চালিয়েছে, তাতে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।

জানা গেছে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের প্রায় ৫০ জন নেতা-কর্মী পরিষদের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে পরিষদের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া, সদস্য সচিব নুরুল হক নুর এবং আরও অনেক নেতা-কর্মী আহত হন। দুঃখজনকভাবে হামলায় জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বা ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কোনো গোষ্ঠীর ওপর ছাত্রলীগের হামলা যেন রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে ছাত্রলীগ সদস্যরা কীভাবে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং ক্যাম্পাসে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কীভাবে নিয়মিত সহিংস সংঘর্ষে জড়িয়েছে, আমরা তা দেখেছি।

কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের ওপর ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন যে হামলা চালিয়েছিল, তার কথাও মনে করিয়ে দেয় এ ঘটনা।

কিন্তু যে বিষয়টি যুক্তির বাইরে তা হলো, মাওলানা ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তারা কেন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলকে আক্রমণ করবে? কেন তারা আমাদের একজন জাতীয় বীরকে শ্রদ্ধা জানানোর মতো একটি সাধারণ কাজকে সহ্য করতে পারেনি? একটা নবগঠিত রাজনৈতিক দল এটি করেছে বলে? তারা দেশের জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিল বলে?

রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মটি গঠনের মাত্র ১ মাস পার হতে না হতেই ছাত্রলীগের সদস্যরা প্রকাশ্যে তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। এটা আমাদের গণতন্ত্রের জন্য অশুভ লক্ষণ। ক্ষমতাসীন দল অনুমোদন করে না— এমন দলগুলোর ওপর হামলার সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে। ক্ষমতাসীন দল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে বড়াই করে, অথচ এর ছাত্র সংগঠন ভিন্ন মত ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির মানুষের ওপর নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে ২০তম বারের মতো ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন।

এ ছাড়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও উদ্বেগের বিষয়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তাদের বাধা কোথায়?

আমরা বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং আশা করি, হামলায় জড়িতরা আইন অনুযায়ী শাস্তি পাবে। আমরা যদি গণতান্ত্রিক জাতি হিসেবে কাজ করতে চাই, তাহলে জনগণের মত প্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্মান করতে হবে ছাত্রলীগ নেতাসহ সবাইকে। ক্ষমতাসীন থাকা দল যত তাড়াতাড়ি বিষয়টি উপলব্ধি করবে, ততই দেশের জন্য মঙ্গল।

অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English
World Press Freedom Day 2024

Has Bangladesh gained anything by a restrictive press?

The latest Bangladesh Bank restriction on journalists is anti-democratic, anti-free press and anti-public interest.

7h ago