দুবাই থেকে নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেট

সিন্ডিকেটের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা জানিয়েছেন

একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট দুবাই থেকে সিন্থেটিক মাদক ক্রিস্টাল মেথের চোরাকারবার ও সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানিয়েছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা। 'আইস' নামে পরিচিত এই মাদক মিয়ানমার থেকে চোরাকারবারের মাধ্যমে ঢাকা আসছে।

তারা আরও জানিয়েছেন, ৩টি স্তরে এই সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

প্রথম স্তর টেকনাফে চালান গ্রহণ করে এবং ঢাকায় পাঠায়। দ্বিতীয় স্তর চালানকে বিক্রির জন্য গুছিয়ে রাখে এবং তৃতীয় স্তর ভোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের কাজ করে।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের চোখে ধুলো দেওয়ার উদ্দেশ্যে সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্লাস্টিকের টেপ দিয়ে মাদক মুড়িয়ে মলদ্বারে লুকিয়ে রাখেন।

গত শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪ মাদক চোরাকারবারিকে গ্রেপ্তার করার পর বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) এই তথ্য জানায়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন— তাজ উদ্দিন (৪৩), মিজানুর রহমান (৫৩), লিটন মাহমুদ (৩২) ও মামুন হোসেন (৩৫)।

তদন্তকারীরা জানান, সিন্ডিকেট সাধারণত প্রতি গ্রাম আইস ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতো কিন্তু কোনো ভোক্তা যদি খুচরা বিক্রেতার ভূমিকা পালন করতে রাজি হতেন, তাহলে তিনি ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় এই মাদক কেনার সুযোগ পেতেন।

ডিএনসির সহকারী পরিচালক (উত্তর) মেহেদী হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তারা প্রথমে কুড়িল থেকে মামুনকে ৬০০ পিস ইয়াবা ও তাজ উদ্দিনকে খিলক্ষেত এলাকা থেকে ৫ গ্রাম আইসসহ গ্রেপ্তার করে।

পরবর্তীতে ডিএনসি মিজানকে বনানী থেকে ১০ গ্রাম ও লিটনকে খিলগাঁও থেকে ১০০ গ্রাম আইসসহ গ্রেপ্তার করে, জানান মেহেদী।

মেহেদী বলেন, 'গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের প্রাথমিক জেরার পর আমরা জানতে পেরেছি, একজন প্রবাসী বাংলাদেশি এনক্রিপ্ট করা অ্যাপের মাধ্যমে এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন।'

সূত্র জানিয়েছে, এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা ৩ মাস আগে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে দুবাই থাকছেন। এই সন্দেহভাজন ব্যক্তি তার কয়েকজন বন্ধুর সহায়তায় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছেন।

সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের কথোপকথনের কিছু অডিও ক্লিপ দ্য ডেইলি স্টার'র হাতে এসেছে। যেখানে মূলহোতাকে সিন্ডিকেটের সদস্যদের নির্দেশ দিতে শোনা যায়। তিনি তাদের জানান, কখনো যেন তারা ভিপিএন চালু না করে হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্য কোনো অ্যাপ দিয়ে কল না করেন।

এ ছাড়া, সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি ব্যবহারকারীদের আরও বেশি করে মাদক কিনতে এবং খুচরা বিক্রেতা হওয়ার জন্য উৎসাহ দেন। তিনি তাদের আরও কম দামে মাদক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, জানিয়েছেন ডিএনসির কর্মকর্তারা।

মেহেদী হাসান জানান, গত ৩ মাসে তারা প্রায় ২২ জন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন এবং ঢাকা থেকে প্রায় ২ কেজি আইস উদ্ধার করেছেন।

তিনি জানান, ইয়াবার পাশাপাশি আইসের সব চালান মিয়ানমার থেকে আসছে।

অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English

PSC announces major changes to ease BCS recruitment process

The PSC chairman says they want to complete the entire process — from prelims to recruitment — in 12 months

1h ago