নাটোরে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোট চাইলেন ৩ সংসদ সদস্য
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসন্ন নাটোর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয়ভাব মনোনীত মেয়র প্রার্থীর উপস্থিতিতে নৌকার পক্ষে ভোট চেয়েছেন ৩ সংসদ সদস্য।
শনিবার রাতে নাটোর শহরের কান্দিভিটুয়া এলাকায় জেলা আ. লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে পৌর আ. লীগের বর্ধিত সভায় নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আ. লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস এবং নাটোর-নওগাঁ (৩৪৩) আসনের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য ও নাটোর জেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী রত্না আহমেদ নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চান।
তারা পৌরসভার আ. লীগ প্রার্থী উমা চৌধুরী জলিকে ভোট দিতে এবং তার পক্ষে নেতা-কর্মীদের ভোটের মাঠে থাকার আহ্বান জানান।
এ সময় তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন।
প্রচারণায় আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'নৌকাকে অবশ্যই জেতাতে হবে। নৌকা হারলে সবাই হারবে। পুলিশ সুপার লিটন সাহা এবং জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ যে বক্তব্য দিচ্ছেন- ইউনিয়ন পরিষদের মতো কঠোর ভোট হবে সিংড়া এবং নাটোর পৌরসভা নির্বাচন। আমিও প্রশাসনকে বলতে চাই, এবার আমরাও কঠোর হবো! ওনারা বক্তব্য দিচ্ছেন, ব্যালটে হাত দিলে হাত ওখানেই থাকবে। তাহলে তো ওনারা ব্যালটে হাত দিচ্ছেন। তাছাড়া কেমন করে ৪৮ শতাংশ নৌকা প্রতীকরে প্রার্থী জয়ী হলো?'
শফিকুল ইসলাম শিমুল বলেন, 'নির্বাচন আগের চেয়ে অনেক কঠিন হবে। নাটোর পৌরসভায় অবশ্যই নৌকার প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। নৌকার বিরোধী যারা থাকবে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।'
রত্না আহমেদ বলেন, 'আমি নারীদের নিয়ে এবং পৌরসভায় আমার নিজ ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীদের বাসায় ডেকে এবং অন্য কোনো জায়গায় মিটিং করে নৌকার পক্ষে ভোট চাইব। প্রয়োজনে টাকা পয়সা খরচ করব।'
পৌর আ. লীগরে বর্ধিত সভা শেষে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইল নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদ্য আব্দুল কুদ্দুস বলেন, 'প্রতীক বরাদ্দের আগে ভোট চাইতে আমাদের কোনো বাধা নেই। দলীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের কাছে ভোট চাইতে বাধা নেই।'
একই বিষয়ে নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দলীয় কার্যালয়ে ভোট চাওয়া মিটিং করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।'
আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর-নওগাঁ সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ বলেন, 'আচরণবিধি লঙ্ঘন আমি জানি। কিন্তু, যেহেতু দলীয় মিটিং তাই আমাকেও ভোট চাইতে হয়েছে।'
নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যেহেতু তফসিল ঘোষণা হয়েছে তাই পৌর এলাকার মধ্যে অবস্থিত অফিসে সংসদ সদস্যরা এমন বক্তব্য দিলে এবং ভোট চাইলে অবশ্যই তা আচরণবিধির লঙ্ঘন হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রতীক বরাদ্দের পরে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে। তখন এমন ঘটনা ঘটলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সরাসরি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।'
নাটোর পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার এবং নাটোরের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, 'তফসিল ঘোষণার পর কোনো সংসদ সদস্য কোনো প্রকার মিটিং বা সভায় ভোট চাইতে পারবেন না। এটা করে থাকলে তারা নির্বাচনী আরচণবিধি লঙ্ঘন করবেন। এমন কোনো অভিযোগ বা কোনো প্রকার সংবাদ পাওয়া গেলে প্রার্থী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
Comments