শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে জাবি শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরাও তাদের সঙ্গে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, 'শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবির উপাচার্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার মান, গবেষণা কীভাবে আন্তর্জাতিক মানের করা যায়, সে ব্যাপারে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীকে কখনো কিছু বলতে শোনা যায়নি। প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বৈরতন্ত্র, দুর্বৃত্তায়ন, দুর্নীতি চলছে। সে ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী কোনো পদক্ষেপ নেননি।'
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের লড়াকু মানসিকতার জয়ের জন্য প্রয়োজনে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা বলেন, '১৬০ ঘণ্টারও বেশি সময় শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা অনশন করেছে, কেউ তাদেরকে হটাতে পারেনি। যত ধরনের ভয়-ভীতি দেখানো দরকার রাষ্ট্রযন্ত্র তার সবই করেছে, তাও তাদেরকে কেউ হটাতে পারেনি। আন্দোলনরত বর্তমান শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়ে মাত্র এক হাজার টাকা প্রদান করায় ৫ প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে আটক করেছে, তাও কেউ তাদের হটাতে পারেনি।'
নৃবিজ্ঞান বিভাগের আরেক অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, 'একটা সময় ছিল, যখন ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকলে উপাচার্যরা সরকারকে জানাতেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন-তখন পুলিশ ঢুকতে পারে না। কিন্তু বর্তমানে দেখা যায়, উপাচার্যকে রক্ষা করার জন্য পুলিশ এবং সরকারের পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগ সবার আগে থাকে। এতকিছুর পরও শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা আন্দোলন জারি রাখতে পেরেছে, এটাই সফলতা।'
অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, 'শাবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যে আন্দোলন শিক্ষার্থীরা চালিয়ে যাচ্ছে, আমরা সেটার সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি। পাশাপাশি শাবিপ্রবি উপাচার্যের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যে উপাচার্যরা পদত্যাগ করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন, আমরা চাই তাদের সে ইচ্ছার বাস্তবায়ন হোক। শিক্ষার্থীরা যে সমস্যা নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছিল, সেটা শুধু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে না, প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে। ডাইনিং হলে খাবারের মান নিয়ে সমস্যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আছে।'
কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান সুমন, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জীবন খন্দকার, অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি প্রমুখ বক্তব্য দেন।
Comments