বাংলাদেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে নিউমোনিয়ায় ১৫ শিশুর মৃত্যু, উদ্বিগ্ন ২৩ নাগরিকের বিবৃতি

গত দুই সপ্তাহে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় নিউমোনিয়ায় ১৫ শিশুর মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ২৩ নাগরিক। তারা বলেছেন, শিশুদের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে আসার পরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা হতাশ হয়েছেন।

গত দুই সপ্তাহে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় নিউমোনিয়ায় ১৫ শিশুর মৃত্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন ২৩ নাগরিক। তারা বলেছেন, শিশুদের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে আসার পরও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা হতাশ হয়েছেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন—ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির প্রমুখ।

তারা বলেছেন, 'পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৫ শিশুর মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে এসেছে। ১ মাস থেকে ২ বছর বসয়ী শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা মোটেই স্বাভাবিক নয়। এমন ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকার বিষয়টি আমাদের গভীরভাবে হতাশ করেছে; আমরা উদ্বিগ্ন।'

শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, 'প্রচলিত স্বাস্থ্যসেবায় নিউমোনিয়ার চিকিৎসা সম্ভব। শুধুমাত্র আর্থিক অসঙ্গতির কারণে উন্নত সেবা নিতে না পারায় শিশুদের মৃত্যু ঘটেছে, এটি বিশ্বাস করার মতো নয়। এতগুলো মৃত্যুর পেছনের কারণ জানতে তদন্ত করা দরকার।'

তারা আরও বলেন, 'কত শিশুর মৃত্যু হলে রাষ্ট্র উদ্বিগ্ন হবে, নড়ে চড়ে বসবে? শিশু মৃত্যুর ঘটনা থেকে প্রমাণ হয়—ওই পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষ মানুষের আকৃতিতে-খোলসে বেড়ে ওঠে মাত্র, তা না হলে কি করে ১৫ শিশুর মৃত্যুর পরও রাষ্ট্রযন্ত্র নিরুত্তাপ পড়ে থাকে! পাহাড়ে উন্নয়নের নামে অনেক প্রকল্প হয়েছে কিন্তু এ সকল প্রকল্প কিছু মানুষের অবসর যাপনের কেন্দ্র।'

'এতগুলোর মৃত্যুতে আমরা একটি ফাঁপা রাষ্ট্র কাঠামোকে দেখতে পাই। ফলে পাহাড় আর সমতলের মধ্যকার বৈষম্যের সম্প্রসারণ বুঝতে পারি। অথচ কথা ছিল ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশের কোথাও বৈষম্য থাকবে না; মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তীকালে এই বৈষম্যের মাত্রা শুধুই প্রকট হয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতির সবটাই এই বৈষম্য তৈরির কারিগর।'

শিশুদের মৃত্যুতে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর অবহেলাকে দায়ী করে তারা বলেন, শুধুমাত্র সেবা উপকরণের অপ্রতুলতাই নয়, সেবাদানকারীদের অবহেলাও এতগুলো প্রাণ ঝরে পড়ার জন্য দায়ী। গত দুই সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিংবা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কোভিড-১৯ এর সংক্রমণে আমরা স্বাস্থ্যখাতের যে নগ্নতা দেখেছি, তাতে এখানে আর এমন কোনো রাখঢাকের বিষয় নেই।'

তিন দাবি

১) অবিলম্বে শিশুর মৃত্যুর পেছনে কি কি সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব আছে, তা খুঁজে বের করতে হবে;

২) হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত উপকরণ ছিল কি না এবং না থাকলে কেন ছিল না;

৩) সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে ঘটনার তদন্ত করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
World Press Freedom Day 2024

Has Bangladesh gained anything by a restrictive press?

The latest Bangladesh Bank restriction on journalists is anti-democratic, anti-free press and anti-public interest.

11h ago